সূরা হাশরের শেষ তিন আয়াত বাংলা উচ্চারণ অর্থসহ- সহজে শিখুন
কোরআন থেকে ছেলেদের নাম অর্থসহআসসালামু আলাইকুম! আপনি কি সূরা হাশরের শেষ তিন আয়াত মুখস্থ করতে চান? অথবা এর অর্থ ও ফজিলত সম্পর্কে জানতে আগ্রহী? তাহলে এই ব্লগ পোস্টটি আপনার জন্য! এখানে আমরা সূরা হাশরের শেষ তিন আয়াত বাংলা উচ্চারণ অর্থসহ আলোচনা করব, যাতে আপনি খুব সহজেই শিখতে পারেন।
আজকের পোস্টে সূরা হাশরের শেষ তিন আয়াত বাংলা উচ্চারণ ও অর্থ জানার পাশাপাশি এই আয়াতের গুরুত্ব, ফজিলত এবং পড়ার সঠিক নিয়ম জানবো। ইসলামের জ্ঞান অর্জনে আগ্রহী প্রত্যেক মুসলিমের জন্য এই সূরা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই, আর দেরি না করে, চলুন শুরু করা যাক!
সূচিপত্রঃ সূরা হাশরের শেষ তিন আয়াত বাংলা উচ্চারণ অর্থসহ- সহজে শিখুন
- সূরা হাশরের শেষ তিন আয়াত: এক নজরে
- সূরা হাশরের শেষ তিন আয়াত বাংলা উচ্চারণ, অর্থ ও ফযিলত
- আয়াত ২২:
- আয়াত ২৩:
- আয়াত ২৪:
- সূরা হাশরের শেষ তিন আয়াতের ফজিলত
- সূরা হাশরের শেষ তিন আয়াত মুখস্থ করার সহজ উপায়
- হাশর শব্দের অর্থ কি?
- সূরা হাশরের শেষ তিন আয়াত পড়ার নিয়ম
- সূরা হাশরের আরবি টেক্সট
- সূরা হাশরের শেষ ৩ আয়াত: কিছু অতিরিক্ত টিপস
- সূরা হাশরের শেষ তিন আয়াত: কেন পড়বেন?
- সূরা হাশরের শেষ তিন আয়াতের গুরুত্ব
- সূরা হাশরের শেষ তিন আয়াত: আপনার জন্য গাইডলাইন
- সূরা হাশরের শেষ তিন আয়াত: কিছু বাস্তব উদাহরণ
- সূরা হাশরের শেষ তিন আয়াত: আপনার সাফল্যের চাবিকাঠি
- শেষ মন্তব্য- সূরা হাশর
সূরা হাশরের শেষ তিন আয়াত: এক নজরে
সূরা হাশরের শেষ তিন আয়াতে আল্লাহ তাআলার পরিচয় এবং তাঁর গুণাবলী সম্পর্কে বিস্তারিত বলা হয়েছে। এই আয়াতগুলো খুবই ফজিলতপূর্ণ এবং নিয়মিত পাঠ করলে অনেক উপকার পাওয়া যায়। নিম্নে শেষ তিন আয়াত তুলে ধরা হলোঃ-
সূরা হাশরের শেষ তিন আয়াত বাংলা উচ্চারণ, অর্থ ও ফযিলত
সূরা হাশরের শেষ তিন আয়াত (২২-২৪) নিচে বাংলা উচ্চারণ, অর্থ এবং ফযিলত উল্লেখ করা হলো:
আয়াত ২২:
আরবি: هُوَ اللَّهُ الَّذِي لَا إِلَٰهَ إِلَّا هُوَ ۖ عَالِمُ الْغَيْبِ وَالشَّهَادَةِ ۖ هُوَ الرَّحْمَٰنُ الرَّحِيمُ
বাংলা উচ্চারণ: হু আল্লাহুল্লাজী লা ইলাহা ইল্লা হুয়া, আলিমুল গাইবি ওয়াশ শাহাদাতি, হুওয়ার রাহমানুর রাহীম।
বাংলা অর্থ: তিনিই আল্লাহ, তিনি ছাড়া কোনো উপাস্য নেই। তিনি দৃশ্য ও অদৃশ্যের জ্ঞানী। তিনি পরম দয়ালু, অতি দয়ালু।
আয়াত ২৩:
আরবি: هُوَ اللَّهُ الَّذِي لَا إِلَٰهَ إِلَّا هُوَ الْمَلِكُ الْقُدُّوسُ السَّلَامُ الْمُؤْمِنُ الْمُهَيْمِنُ الْعَزِيزُ الْجَبَّارُ الْمُتَكَبِّرُ ۚ سُبْحَانَ اللَّهِ عَمَّا يُشْرِكُونَ
বাংলা উচ্চারণ: হু আল্লাহুল্লাজী লা ইলাহা ইল্লা হুয়া, আল মালিকুল কুদ্দুস, আসসালামুল মু’মিনুল মুহাইমিনুল আ’যীযুল জাব্বারুল মুতাকাব্বির। সুবহানাল্লাহি আম্মা ইউশরিকুন।
বাংলা অর্থ: তিনিই আল্লাহ, তিনি ছাড়া কোনো উপাস্য নেই। তিনি বাদশা, অতি পবিত্র, শান্তি স্থাপনকারী, নিরাপত্তা দানকারী, আশ্রয়দাতা, পরাক্রমশালী, প্রবল, অহংকারী। তারা যা শরীক করে, আল্লাহ তা থেকে পবিত্র।
আয়াত ২৪:
আরবি: هُوَ اللَّهُ الْخَالِقُ الْبَارِئُ الْمُصَوِّرُ ۖ لَهُ الْأَسْمَاءُ الْحُسْنَىٰ ۚ يُسَبِّحُ لَهُ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ ۖ وَهُوَ الْعَزِيزُ الْحَكِيمُ
বাংলা উচ্চারণ: হু আল্লাহুল খালিকুল বারিয়ুল মুসাওয়্যিরু লাহুল আসমাউল হুসনা, ইউসাব্বিহু লাহু মা ফিস সামাওয়াতি ওয়াল আরদ্, ওয়াহুওয়াল আ’যীযুল হাকীম।
বাংলা অর্থ: তিনিই আল্লাহ, সৃষ্টিকর্তা, উদ্ভাবনকর্তা, রূপদানকারী। তাঁর সুন্দর নামসমূহ রয়েছে। আকাশ ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে, সবই তাঁর পবিত্রতা ঘোষণা করে। তিনি পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।
Source: Al-Quran, Surah Al-Hashr, Ayah 22-24
সূরা হাশরের শেষ তিন আয়াতের ফজিলত
সূরা হাশরের শেষ তিন আয়াতের ফজিলত অনেক। নিচে কয়েকটি উল্লেখযোগ্য ফজিলত উল্লেখ করা হলো:
- ক্ষমা লাভ: নিয়মিত এই আয়াতগুলো পাঠ করলে আল্লাহ তাআলা গুনাহ মাফ করে দেন।
- নিরাপত্তা: যে ব্যক্তি সকালে এই আয়াতগুলো পাঠ করবে, সন্ধ্যা পর্যন্ত সে আল্লাহর নিরাপত্তায় থাকবে। আর যে সন্ধ্যায় পাঠ করবে, সকাল পর্যন্ত সে আল্লাহর নিরাপত্তায় থাকবে।
- প্রাচুর্য: এই আয়াতগুলো পাঠ করলে আল্লাহ তাআলা রিযিক বাড়িয়ে দেন এবং জীবনে প্রাচুর্য আসে।
- মনের শান্তি: নিয়মিত পাঠ করলে মন শান্ত থাকে এবং দুশ্চিন্তা দূর হয়।
সূরা হাশরের শেষ তিন আয়াত মুখস্থ করার সহজ উপায়
এই আয়াতগুলো মুখস্থ করা কঠিন মনে হতে পারে, কিন্তু কিছু সহজ উপায় অনুসরণ করলে আপনি সহজেই মুখস্থ করতে পারবেন:
- বার বার পড়া: প্রথমে আয়াতগুলো বারবার পড়ুন। প্রতি আয়াত কমপক্ষে ১০-১৫ বার করে পড়ুন।
- ছোট অংশে ভাগ করা: পুরো আয়াত একসাথে মুখস্থ না করে ছোট ছোট অংশে ভাগ করে নিন। যেমন, প্রথমে শুধু প্রথম লাইনটি মুখস্থ করুন, তারপর দ্বিতীয় লাইন।
- অর্থ বোঝা: আয়াতের অর্থ ভালোভাবে বুঝলে মুখস্থ করা সহজ হয়ে যায়। তাই, প্রথমে বাংলা অর্থ ভালোভাবে বুঝে নিন।
- অডিও শোনা: কোনো ক্বারীর তেলাওয়াত শুনুন এবং সাথে সাথে পড়ার চেষ্টা করুন। এতে আপনার উচ্চারণ সঠিক হবে এবং মুখস্থ করতে সুবিধা হবে। ইউটিউবে অনেক সুন্দর তিলাওয়াত পাওয়া যায়।
- লিখে মুখস্থ করা: আয়াতগুলো দেখে দেখে খাতায় লিখুন। লেখার সময় উচ্চারণ করে পড়ুন। এতে আপনার মুখস্থ দ্রুত হবে।
- নামাজের পর পড়া: প্রতিদিন নামাজের পর এই আয়াতগুলো পাঠ করুন। নিয়মিত পড়ার মাধ্যমে এগুলো আপনার স্মৃতিতে গেঁথে যাবে।
- বন্ধুদের সাথে আলোচনা: আপনার বন্ধুদের সাথে এই আয়াতগুলো নিয়ে আলোচনা করুন। একে অপরকে শোনান। এতে মুখস্থ আরও দৃঢ় হবে।
- ধৈর্য রাখা: মুখস্থ করার সময় ধৈর্য রাখা খুবই জরুরি। প্রথমবার না পারলে হতাশ হবেন না। চেষ্টা করতে থাকুন, অবশ্যই সফল হবেন।
হাশর শব্দের অর্থ কি?
"হাশর" শব্দের অর্থ হলো সমবেত করা, একত্রিত করা বা পুনরুত্থান। ইসলামী পরিভাষায়, হাশর বলা হয় কিয়ামতের দিন সমস্ত মানুষকে হিসাব-নিকাশের জন্য আল্লাহ তা'আলার সামনে একত্রিত করা। এই দিনে প্রত্যেক মানুষ তার নিজ নিজ কর্মের ফল ভোগ করবে।
সূরা হাশরের শেষ তিন আয়াত পড়ার নিয়ম
সূরা হাশরের শেষ তিন আয়াত পড়ার কিছু নিয়ম নিচে দেওয়া হলো:
- পবিত্রতা: অজু করে পবিত্র অবস্থায় এই আয়াতগুলো পাঠ করা উত্তম।
- সময়: সাধারণত ফজর ও মাগরিবের নামাজের পর এই আয়াতগুলো পড়ার কথা বলা হয়েছে। তবে, আপনি যেকোনো সময় পড়তে পারেন।
- নিয়ম: প্রথমে দরুদ শরীফ পড়ুন, তারপর সূরা হাশরের শেষ তিন আয়াত পাঠ করুন। শেষে আবার দরুদ শরীফ পড়ুন।
- মনোযোগ: মনোযোগের সাথে এবং ধীরে ধীরে আয়াতগুলো পাঠ করুন, যাতে অর্থের প্রতি খেয়াল থাকে।
সূরা হাশরের আরবি টেক্সট
সূরা হাশরের শেষ ৩ আয়াত আরবি টেক্সট নিচের ছবিতে দেওয়া হলো-
সূরা হাশরের শেষ ৩ আয়াত: কিছু অতিরিক্ত টিপস
- প্রতিদিনের জীবনে এই আয়াতগুলোর শিক্ষা অনুসরণ করার চেষ্টা করুন।
- অন্যদেরকেও এই আয়াতগুলো সম্পর্কে জানাতে উৎসাহিত করুন।
- এই আয়াতগুলো মুখস্থ করে নিয়মিত তিলাওয়াত করলে আপনার জীবনে অনেক ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে।
সূরা হাশরের শেষ তিন আয়াত: কেন পড়বেন?
সূরা হাশরের শেষ তিন আয়াতে আল্লাহ তায়ালার পরিচয় এবং তাঁর গুণাবলী সম্পর্কে বিস্তারিত বলা হয়েছে। এই আয়াতগুলো পাঠ করার মাধ্যমে আমরা আল্লাহর নৈকট্য লাভ করতে পারি এবং নিজেদের জীবনকে সুন্দর করতে পারি। এছাড়াও, এই আয়াতগুলো আমাদের ঈমানকে মজবুত করে এবং আল্লাহর প্রতি আমাদের ভালোবাসা বৃদ্ধি করে।
সূরা হাশরের শেষ তিন আয়াতের গুরুত্ব
সূরা হাশরের শেষ তিন আয়াত শুধু তেলাওয়াতের জন্য নয়, বরং এর অর্থ বোঝা এবং জীবনে প্রয়োগ করাও জরুরি। এই আয়াতগুলোতে আল্লাহ তাআলার যে গুণাবলী বর্ণনা করা হয়েছে, সেগুলো আমাদের জীবনে প্রতিফলিত করার চেষ্টা করতে হবে। তাহলেই আমরা সত্যিকার অর্থে এই আয়াতগুলোর ফজিলত লাভ করতে পারব।
সূরা হাশরের শেষ তিন আয়াত: আপনার জন্য গাইডলাইন
- আজই সূরা হাশরের শেষ তিন আয়াত মুখস্থ করার প্রতিজ্ঞা করুন।
- প্রতিদিন এই আয়াতগুলো পাঠ করুন এবং এর অর্থ নিয়ে চিন্তা করুন।
- আপনার জীবনে আল্লাহর গুণাবলী প্রতিফলিত করার চেষ্টা করুন।
- অন্যদেরকেও এই আয়াতগুলো সম্পর্কে জানতে উৎসাহিত করুন।
সূরা হাশরের শেষ তিন আয়াত: কিছু বাস্তব উদাহরণ
- একজন ব্যক্তি প্রতিদিন সূরা হাশরের শেষ তিন আয়াত পাঠ করার মাধ্যমে মানসিক শান্তি লাভ করেছেন এবং তার জীবনের অনেক সমস্যা সমাধান হয়েছে।
- আরেকজন ব্যক্তি এই আয়াতগুলো মুখস্থ করার মাধ্যমে আল্লাহর প্রতি তার ভালোবাসা আরও গভীর হয়েছে এবং তার ঈমান মজবুত হয়েছে।
- আরও একজন ব্যক্তি এই আয়াতগুলোর শিক্ষা অনুসরণ করে তার জীবনে অনেক ইতিবাচক পরিবর্তন এনেছেন এবং সফল হয়েছেন।
সূরা হাশরের শেষ তিন আয়াত: আপনার সাফল্যের চাবিকাঠি
সূরা হাশরের শেষ তিন আয়াত আপনার জীবনে সাফল্যের চাবিকাঠি হতে পারে। যদি আপনি এই আয়াতগুলোর শিক্ষা অনুসরণ করেন এবং আপনার জীবনে প্রয়োগ করেন, তাহলে আপনি অবশ্যই সফল হবেন।
শেষ মন্তব্য- সূরা হাশর
সূরা হাশরের শেষ তিন আয়াত আমাদের জীবনে অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এই আয়াতগুলো পাঠ করার মাধ্যমে আমরা আল্লাহর নৈকট্য লাভ করতে পারি এবং নিজেদের জীবনকে সুন্দর করতে পারি। তাই, আসুন আমরা সবাই এই আয়াতগুলো মুখস্থ করি এবং নিয়মিত পাঠ করি।
এই ছিলো সূরা হাশরের শেষ তিন আয়াত নিয়ে আমাদের আলোচনা। আশা করি, এই ব্লগ পোস্টটি আপনার জন্য সহায়ক হয়েছে। যদি আপনার কোন প্রশ্ন থাকে, তাহলে কমেন্ট বক্সে জিজ্ঞাসা করতে পারেন।
আল্লাহ হাফেজ!


রিফাত আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url