বিকাশ একাউন্ট খোলার নিয়ম | ৫ মিনিটে একাউন্ট খুলুন!
NID (জাতীয় পরিচয় পত্র) সংশোধন করার নিয়মনগদ টাকা লেনদেনের ঝামেলা থেকে মুক্তি পেতে চান? তাহলে বিকাশ একাউন্ট খোলা আপনার জন্য হতে পারে সবচেয়ে সহজ সমাধান! বিকাশ (bKash) শুধু টাকা লেনদেনের মাধ্যম নয়, এটি এখন দৈনন্দিন জীবনের একটা অংশ। বিদ্যুৎ বিল দেওয়া থেকে শুরু করে কেনাকাটা, মোবাইল রিচার্জ, সবকিছুই এখন বিকাশের মাধ্যমে করা যায়।
কিন্তু বিকাশ একাউন্ট খুলবেন কিভাবে? 🤔 চিন্তা নেই! এই ব্লগ পোস্টে আমি আপনাদের জানাবো, কিভাবে খুব সহজে কয়েক মিনিটের মধ্যেই বিকাশ একাউন্ট খুলতে পারবেন। তাহলে চলুন, শুরু করা যাক!
সূচিপত্রঃ বিকাশ একাউন্ট খোলার নিয়ম | ৫ মিনিটে একাউন্ট খুলুন!
- অ্যাপের মাধ্যমে বিকাশ একাউন্ট খোলার নিয়ম
- বিকাশ এজেন্ট পয়েন্ট থেকে একাউন্ট খোলার নিয়ম
- বিকাশ একাউন্ট খুলতে কি কি লাগে?
- বিকাশ কাস্টমার কেয়ার নাম্বার
- বিকাশ একাউন্ট খোলার সুবিধা
- বিকাশ একাউন্ট ব্যবহার করার নিয়ম
- বিকাশ অ্যাপ ডাউনলোড করার নিয়ম
- বিকাশ একাউন্ট খোলার জন্য কি কি ডকুমেন্টস লাগে?
- বিকাশ একাউন্ট খোলার বয়স কত?
- বিকাশ একাউন্ট খোলার পর প্রথম কাজ কি?
- বিকাশ একাউন্ট খোলার সময় কি কি বিষয় মনে রাখতে হবে?
- বিকাশ একাউন্ট খোলার খরচ কত?
- উপসংহার- বিকাশ একাউন্ট খোলার নিয়ম
বিকাশ একাউন্ট খোলার নিয়ম | ৫ মিনিটে একাউন্ট খুলুন!
বিকাশ একাউন্ট খোলা এখন আগের চেয়েও সহজ। আপনি চাইলে ঘরে বসেই অনলাইনে অথবা যেকোনো বিকাশ এজেন্ট পয়েন্ট থেকে খুলতে পারেন। নিচে দুইটি উপায় নিয়েই বিস্তারিত আলোচনা করা হলো:
অ্যাপের মাধ্যমে বিকাশ একাউন্ট খোলার নিয়ম
স্মার্টফোন থাকলে আপনি খুব সহজেই বিকাশ অ্যাপের মাধ্যমে একাউন্ট খুলতে পারবেন। চলুন, ধাপে ধাপে দেখে নেই:
- বিকাশ অ্যাপ ডাউনলোড করুনঃ প্রথমে গুগল প্লে স্টোর (Google Play Store) অথবা অ্যাপল অ্যাপ স্টোর (Apple App Store) থেকে বিকাশ অ্যাপটি ডাউনলোড করে ইন্সটল করুন। বিকাশ অ্যাপ ডাউনলোড করার সময় খেয়াল রাখবেন, সেটি যেন অফিশিয়াল অ্যাপ হয়। অনেক সময় নকল অ্যাপও দেখা যায়, তাই একটু সতর্ক থাকবেন। বিকাশ অ্যাপ ডাউনলোড অফার ও পেতে পারেন যদি নতুন ইউজার হয়ে থাকেন।
- একাউন্ট তৈরি করার অপশনঃ অ্যাপটি খোলার পর "একাউন্ট খুলুন" অথবা "Create Account" অপশনটিতে ক্লিক করুন।
- মোবাইল নম্বর দিনঃ এরপর আপনার মোবাইল নম্বরটি সঠিকভাবে লিখুন। এখানে সেই নম্বরটি ব্যবহার করুন, যা আপনি বিকাশ একাউন্টের সাথে যুক্ত করতে চান।
- ভেরিফিকেশন কোডঃ আপনার দেওয়া মোবাইল নম্বরে একটি ভেরিফিকেশন কোড (OTP) পাঠানো হবে। কোডটি সঠিক স্থানে লিখুন।
- জাতীয় পরিচয়পত্র (NID) এর ছবি তুলুনঃ আপনার জাতীয় পরিচয়পত্রের সামনের ও পেছনের অংশের স্পষ্ট ছবি তুলুন। খেয়াল রাখবেন, ছবি যেন স্পষ্ট হয় এবং আলো ভালো থাকে।
- নিজের তথ্য দিনঃ আপনার জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী নিজের নাম, জন্ম তারিখ এবং অন্যান্য তথ্য দিন।
- নিজের ছবি তুলুনঃ একটি স্পষ্ট সেলফি তুলুন।
- শর্তাবলী পড়ুন এবং সম্মতি দিনঃ বিকাশের শর্তাবলী মনোযোগ দিয়ে পড়ে "সম্মত আছি" অপশনে ক্লিক করুন।
- একাউন্ট নিশ্চিত করুনঃ সব তথ্য দেওয়ার পর বিকাশ আপনার তথ্য যাচাই করবে এবং আপনার একাউন্টটি খুলে দেওয়া হবে।
ব্যাস! আপনার বিকাশ একাউন্ট খোলা হয়ে গেল। এবার আপনি আপনার একাউন্টে টাকা যোগ করে লেনদেন শুরু করতে পারবেন।
বিকাশ এজেন্ট পয়েন্ট থেকে একাউন্ট খোলার নিয়ম
যদি আপনার স্মার্টফোন না থাকে অথবা অ্যাপ ব্যবহার করতে অসুবিধা হয়, তবে বিকাশ এজেন্ট পয়েন্ট থেকে একাউন্ট খুলতে পারবেন।
- নিকটস্থ এজেন্ট পয়েন্টে যানঃ আপনার এলাকার নিকটস্থ বিকাশ এজেন্ট পয়েন্ট খুঁজে বের করুন।
- প্রয়োজনীয় কাগজপত্রঃ আপনার জাতীয় পরিচয়পত্র (NID) এবং পাসপোর্ট সাইজের ছবি সাথে নিয়ে যান।
- এজেন্টের সহায়তা নিনঃ এজেন্টকে আপনার একাউন্ট খোলার ইচ্ছার কথা জানান। তিনি আপনাকে ফর্ম পূরণ করতে এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিতে সহায়তা করবেন।
- ফর্ম পূরণ করুনঃ এজেন্ট আপনাকে একটি ফর্ম দেবেন, সেটি সঠিকভাবে পূরণ করুন।
- বায়োমেট্রিক ভেরিফিকেশনঃ আপনার আঙ্গুলের ছাপ (ফিঙ্গারপ্রিন্ট) দিয়ে বায়োমেট্রিক ভেরিফিকেশন সম্পন্ন করুন।
- একাউন্ট নিশ্চিত করুনঃ এজেন্ট আপনার দেওয়া তথ্য যাচাই করে আপনার একাউন্টটি খুলে দেবেন।
এজেন্ট আপনাকে আপনার নতুন একাউন্টের তথ্য জানাবেন এবং আপনি সাথে সাথেই লেনদেন শুরু করতে পারবেন।
বিকাশ একাউন্ট খুলতে কি কি লাগে?
বিকাশ একাউন্ট খোলার জন্য আপনার কিছু জিনিস হাতের কাছে রাখতে হবে। এগুলো হলো:
- আপনার একটি মোবাইল ফোন এবং একটি সচল মোবাইল নম্বর থাকতে হবে।
- জাতীয় পরিচয়পত্র (NID) অথবা বৈধ ছবিযুক্ত পরিচয়পত্র।
- পাসপোর্ট সাইজের ছবি (এজেন্ট পয়েন্টের জন্য)।
- একাউন্ট খোলার ফর্ম (এজেন্ট পয়েন্ট থেকে সংগ্রহ করতে হবে)।
বিকাশ কাস্টমার কেয়ার নাম্বার
বিকাশ কাস্টমার কেয়ার নাম্বার আপনার জন্য সবসময় প্রস্তুত। বিকাশ সম্পর্কিত যেকোনো সমস্যা বা জিজ্ঞাসা থাকলে, আপনি সরাসরি তাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। বিকাশ কাস্টমার কেয়ার নাম্বারগুলো নিচে দেওয়া হলো:
- ১৬২৪৭ (যেকোনো মোবাইল অপারেটর থেকে)
- 02-55663000 (ঢাকা থেকে)
- support@bkash.com (ইমেইল)
- বিকাশ অ্যাপের লাইভ চ্যাট অপশন
বিকাশ কাস্টমার কেয়ার থেকে আপনি একাউন্ট সংক্রান্ত তথ্য, লেনদেন সমস্যা, অথবা অন্য যেকোনো বিষয়ে সাহায্য নিতে পারবেন।
বিকাশ একাউন্ট খোলার সুবিধা
বিকাশ একাউন্ট খোলার অনেক সুবিধা রয়েছে। তার মধ্যে কয়েকটি নিচে উল্লেখ করা হলোঃ
- সহজ লেনদেনঃ বিকাশ দিয়ে আপনি খুব সহজে টাকা লেনদেন করতে পারবেন।
- সময় সাশ্রয়ঃ লাইনে দাঁড়িয়ে বিল পরিশোধ করার ঝামেলা থেকে মুক্তি।
- নিরাপদঃ বিকাশে লেনদেন করা অনেক বেশি নিরাপদ।
- মোবাইল রিচার্জঃ যেকোনো সময় নিজের বা অন্যের মোবাইলে রিচার্জ করতে পারবেন।
- অনলাইন কেনাকাটাঃ বিভিন্ন অনলাইন স্টোর থেকে বিকাশের মাধ্যমে কেনাকাটা করতে পারবেন।
- বিল পরিশোধঃ বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানি সহ বিভিন্ন বিল ঘরে বসেই পরিশোধ করা যায়।
বিকাশ একাউন্ট ব্যবহার করার নিয়ম
বিকাশ একাউন্ট ব্যবহার করা খুবই সহজ। নিচে কিছু সাধারণ ব্যবহারের নিয়ম দেওয়া হলোঃ
- টাকা পাঠানো (Send Money): অন্য বিকাশ একাউন্টে টাকা পাঠানোর জন্য এই অপশনটি ব্যবহার করুন।
- মোবাইল রিচার্জ (Mobile Recharge): নিজের বা অন্য কারো মোবাইলে রিচার্জ করার জন্য এই অপশনটি ব্যবহার করুন।
- পেমেন্ট (Payment): বিভিন্ন দোকানে বা অনলাইনে পেমেন্ট করার জন্য এই অপশনটি ব্যবহার করুন।
- ক্যাশ আউট (Cash Out): এজেন্ট পয়েন্ট থেকে টাকা তোলার জন্য এই অপশনটি ব্যবহার করুন।
- বিল পরিশোধ (Bill Pay): বিভিন্ন বিল পরিশোধ করার জন্য এই অপশনটি ব্যবহার করুন।
বিকাশ অ্যাপ ডাউনলোড করার নিয়ম
বিকাশ অ্যাপ ডাউনলোড করা খুবই সহজ। আপনার স্মার্টফোনের অপারেটিং সিস্টেম অনুযায়ী, নিচের পদ্ধতি অনুসরণ করুন:
- অ্যান্ড্রয়েড (Android) ব্যবহারকারীদের জন্যঃ গুগল প্লে স্টোরে গিয়ে "bKash" লিখে সার্চ করুন এবং অফিশিয়াল অ্যাপটি ডাউনলোড করে ইন্সটল করুন।
- আইওএস (iOS) ব্যবহারকারীদের জন্যঃ অ্যাপল অ্যাপ স্টোরে গিয়ে "bKash" লিখে সার্চ করুন এবং অফিশিয়াল অ্যাপটি ডাউনলোড করে ইন্সটল করুন।
বিকাশ অ্যাপ ডাউনলোড করার সময়, অ্যাপের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য সেটি অফিশিয়াল সোর্স থেকে ডাউনলোড করুন।
বিকাশ একাউন্ট খোলার জন্য কি কি ডকুমেন্টস লাগে?
বিকাশ একাউন্ট খোলার জন্য প্রধানত আপনার জাতীয় পরিচয়পত্র (NID) প্রয়োজন হবে। এছাড়া, এজেন্ট পয়েন্ট থেকে একাউন্ট খোলার সময় পাসপোর্ট সাইজের ছবিও লাগতে পারে।
বিকাশ একাউন্ট খোলার বয়স কত?
বিকাশ একাউন্ট খোলার জন্য আপনার বয়স কমপক্ষে ১৮ বছর হতে হবে। ১৮ বছরের নিচে কেউ নিজের নামে বিকাশ একাউন্ট খুলতে পারবে না।তবে, বাড়ি মধ্যে কারোর যদি বিকাশ একাউন্ট থাকে (যেমন- পিতা, মাতা, বড় ভাই) তাহলে তাদের বিকাশ দ্বারা বিকাশ স্টুডেন্ট আইডি খুলতে পারবেন।১৮ বছরের কম হলেও সে Bkash account খুলতে পারবে তবে সেটি নিজের নামে না।নিজের জন্ম নিবন্ধন এবং বাড়ির যে কোনো একজনের বিকাশ একাউন্ট দ্বারা bkash students একাউন্ট খুলতে পারবেন।
বিকাশ একাউন্ট খোলার পর প্রথম কাজ কি?
বিকাশ একাউন্ট খোলার পর আপনার প্রথম কাজ হলো একাউন্টটি সঠিকভাবে ব্যবহার করা শিখা। প্রথমে কিছু ছোট লেনদেন করে দেখুন, যেমন মোবাইল রিচার্জ অথবা কাউকে অল্প কিছু টাকা পাঠানো। এতে আপনি বুঝতে পারবেন কিভাবে একাউন্ট কাজ করে।
বিকাশ একাউন্ট খোলার সময় কি কি বিষয় মনে রাখতে হবে?
বিকাশ একাউন্ট খোলার সময় কিছু বিষয় মনে রাখা দরকার। এগুলো হলো:
- নিজের সঠিক তথ্য দিন।
- জাতীয় পরিচয়পত্রের স্পষ্ট ছবি তুলুন।
- শর্তাবলী ভালোভাবে পড়ুন।
- একাউন্ট খোলার পর পিন নম্বর গোপন রাখুন।
বিকাশ একাউন্ট খোলার খরচ কত?
বিকাশ একাউন্ট খোলা একদম ফ্রী! এর জন্য কোনো টাকা লাগে না। যদি কেউ আপনার কাছে টাকা দাবি করে, তবে বুঝবেন তিনি প্রতারক।
উপসংহার- বিকাশ একাউন্ট খোলার নিয়ম
বিকাশ একাউন্ট খোলা এখন খুবই সহজ, তাই আর দেরি না করে আজই একটি একাউন্ট খুলে ফেলুন! এই ডিজিটাল যুগে, বিকাশ আপনার জীবনকে আরও সহজ করে তুলবে।
আজকের ব্লগে বিকাশ একাউন্ট খোলার নিয়ম, বিকাশ একাউন্ট খুলতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র এবং বিকাশ কাস্টমার কেয়ার নাম্বার, বিকাশ একাউন্ট খোলার সুবিধা, বয়স ও খরচ ইত্যাদি তুলে ধরেছি। আশা করি, এই ব্লগ পোস্টটি আপনাকে বিকাশ একাউন্ট খোলার নিয়ম থেকে শুরু করে একাউন্ট খোলার পর টাকা লেনদেন করা পর্যন্ত বিস্তারিত জানতে সাহায্য করেছে। যদি আপনার আর কোনো প্রশ্ন থাকে, তবে কমেন্ট করে জানাতে পারেন। ধন্যবাদ! 😊

রিফাত আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url