প্রফেশনাল ইউটিউব চ্যানেল খোলার নিয়ম | সফল ইউটিউবার হওয়ার প্রথম ধাপ
শবে কদরের আমলপ্রফেশনাল ইউটিউব চ্যানেল খোলার নিয়ম।বর্তমান সময়ে দেখি অনেকেই ইউটুব বা ফেজবুক থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা ইনকাম করতেছে।আমরা অনেকেই সেটা দেখে ইউটুব চ্যানেল খুলে সেই চ্যানেলটি মনিটাইজ করার মাধ্যমে ইনকাম করতে চাই।ইনকাম করার জন্য প্রয়োজন একটা প্রফেশনাল ভাবে ইউটিউব চ্যানেল খোলা।আজকের আর্টিকেলের মধ্যে প্রফেশনাল ইউটিউব চ্যানেল খোলার নিয়ম আলোচনা করেছি।
প্রফেশনাল ইউটুব চ্যানেল খোলার জন্য প্রয়োজন একটা জিমেইল।প্রফেশনাল ইউটিউব চ্যানেল খুলতে হলে আপনাকে বিজনেস ইমেইল ক্রিয়েট করতে হবে।আমরা নিম্নে ধাপে ধাপে প্রফেশনাল ইউটিউব চ্যানেল খোলার নিয়ম তুলে ধরেছি।জানতে হলে সম্পূর্ণ আর্টিকেল পড়ুন।
পোস্ট সূচিপত্রঃ- প্রফেশনাল ইউটিউব চ্যানেল খোলার নিয়ম|সফল ইউটিউবার হওয়ার প্রথম ধাপ
প্রফেশনালভাবে ইউটিউব চ্যানেল খোলার নিয়ম
প্রফেশনাল ইউটিউব চ্যানেল খোলার জন্য প্রয়োজন একটা বিজনেস ইমেইল।আপনার যদি বিজনেস ইমেইল খোলা,না থাকে তাহলে ক্রিয়েট করে নিবেন।বিজনেস ইমেইল ক্রিয়েট করার পরে আপনার ইউটিউব অ্যাপ ওপেন করে নিবেন তারপরে আপনার বিজনেস ইমেইলটা ইউটুবে লগইন করে নিতে হবে এবং দেখবেন ইউটিউবে কিছু নাই।একদম সাদা পেজ আসবে।নিচের ছবিতে দেখানো জায়গায় ক্লিক করুন।
তারপর ক্রিয়েট চ্যানেলে ক্লিক করুন।ক্রিয়েট চ্যানেলে ক্লিক করলে আপনার একটা নাম এবং ইউজার নেম দিতে হবে।আপনার ইউটিউব চ্যানেলের কি নাম দিবেন এটা আগে সিলেক্ট করে নিবেন তারপরে চ্যানেল খুলতে বসবেন।নিচের দেখানো ছবি দেখে নিন।
ক্রিয়েট চ্যানেলে ক্লিক করলে আপনার ইউটিউব চ্যানেলের নাম দিবেন।চ্যানেলের নাম নির্বাচনের ক্ষেত্রে অবশ্যই ইউনিক ব্যবহার করবেন,যাতে আপনার চ্যানেলের নাম সার্চ করলে সবার প্রথমে আপনার চ্যানেল আসে।এসব দেওয়ার পরে create channel ক্লিক করুন।তারপরে আপনার channel খোলা complete। নিচে ছবি দেওয়া হলো।
বিজনেস ইমেইল খোলার সঠিক নিয়ম
আমরা আগেই বলেছি, প্রোফেশনাল একটা ইউটিউব চ্যানেল খুলতে হলে অবশ্যই বিজনেস ইমেইল থাকতে হবে।তাই আপনার যদি বিজনেস ইমেইল খোলা না থাকে তাহলে বিজনেস ইমেইল খোলার নিয়ম জেনে নিন।
বিজনেস ইমেইল খোলার জন্য প্রথমে আপনার জিমেইল অ্যাপ ওপেন করবেন তারপরে জিমেইল ক্রিয়েট লেখায় ক্লিক করুন।তারপরে for work or my business ক্লিক করুন।নিচে ছবি দেওয়া হলো।
for work or my business ক্লিক করার পরে আপনাকে একটা নাম দিতে হবে।আপনার পছন্দ মতো একটা নাম দিবেন।তারপরে নিজের প্রয়োজনীয় কিছু তথ্য দিয়ে পূরণ করে নিবেন।যেমন : Gender,Date of Birth ইত্যাদি।এগুলো দেওয়ার পরে Next ক্লিক করুন।
এখন আপনাকে একটা ডোমেইন নেম সিলেক্ট করতে হবে যা এখনো কেউ ব্যবহার করেনি।ডোমেইন নেম হলো : rifatit@gmail.com এই বিজনেস ইমেইলের (rifatit) হলো ডোমেইন নেম।এটা একদম ইউনিক হতে হবে, তাছাড়া নিবে না।
তারপরে আপনাকে একটা শক্তিশালী পাসওয়ার্ড সেট করতে হবে তারপরে Next দিতে হবে এখন সব কিছু দেওয়ার পরে আপনার বিজনেস ইমেইল খোলা হয়ে যাবে।
ইউটিউব চ্যানেল এর জন্য নিশ সিলেক্ট করা
ইউটিউব চ্যানেলের জন্য নিশ অর্থাৎ, টপিক সিলেক্ট করা অত্যান্ত জরুরি।আপনি যদি সঠিক নিশ সিলেক্ট করতে পারেন তাহলে আপনার ইউটিউব মনিটাইজ করতে অনেক সুবিধা হবে।কারণ:ঐ বিষয় সম্পর্কে সবাই জানতে ইচ্ছুক।সার্চ ভলিয়ম থাকবে সবসময় বেশি।
যার কারণে আপনি আপনার চ্যানের প্রতি টা ভিডিও তে বিপুল ভিজিটর পাওয়ার সুযোগ থাকবে।এজন্য নিশ অর্থাৎ,টপিক সিলেক্ট করা জরুরি।নিম্নে এমন কিছু টপিকের না ম তুলে ধরা হলো:
- ফুড ব্লগ রিভিউ
- বিভিন্ন ফোন,ক্যামেরা অর্থাৎ, টেকনোলজি রিলেটেড যন্ত্রপাতির রিভিউ দিতে পারেন
- ভিডিও ব্লগ।যেমন:ট্রাভেল,লাইফ স্টাইল।
- এডুকেশন: বিভিন্ন ক্লাসের বই গুলো ভিডিও টিউটোরিয়াল বনিয়ে পোস্ট করতে পারেন।
- গেমিং: গেমিং ভিডিও করতে পারেন।
ইউটিউব চ্যানেল খোলার পর কিছু সেটিংস
ইউটিউব চ্যানেল খোলার পরে যে সেটিং থাকে সেটি ডিফল্ট ভাবে দেওয়া থাকে।এটি আপনাকে মডিফাই করে নিতে হবে।কারণ আপনার চ্যানেল গ্রো করার জন্য এটি করা খুব জরুরি।এই সেটিং গুলো করলে আপনার কন্টেন্ট গুলো র্যাংক করার সম্ভাবনা অনেক গুণ বেড়ে যাবে।নিম্নে ইউটিউব চ্যানেল সাধারণ কিছু সেটিং তুলে ধরা হলো:
আপনার খোলা ইউটিউব চ্যানেলটি অবশ্যই YouTube Studio তে লগইন করবেন।তরপরে Basic info তবে যাবেন।এখানে আপনার country সিলেক্ট করবেন।
পরবর্তীতে একটু নিচে যাবেন দেখবেন।কিউওয়ার্ড দেওয়ার একটা অপশন।এখানে আপনার টপিকের উপর নির্ভর করে কিছু কোয়ালিটি সম্পন্ন কিউওয়ার্ড দেন।এটি আপনার চ্যানেল র্যাংক করাবে।এছাড়াও আপনি চাইলে আপনার ইচ্ছে মতো আরও মডিফাই করে নিতে পারবেন।
চ্যানেল কাস্টেমাইজেশন করার সঠিক নিয়ম
ইউটিউব চ্যানেল কাস্টমাইজ করা জরুরি। কারণ:আপনার চ্যানেল যদি ভালোভাবে সাজানো গোছানো না থাকে তাহলে দেখতে তেমন ভালো লাগবে না।দর্শকদের কাছে অপছন্দনীয় হবে।চ্যানেল ভালো করে কাস্টমাইজ করা থাকলে আপনার Subscriber বাড়াতে ভালো কাজ দিবে।
এছাড়াও আপনার চ্যানেল যদি অগোছালো থাকে বিভিন্ন ক্যাটাগরির ভিডিও এড করা থাকে তাহলে কেউ আপনার চ্যানেল ভিউ করলে তার পছন্দ হবে না।
ধরুন,সে প্রোডাক্ট রিভিউ ভিডিও দেখে আসছে এসে যদি দেখে বিভিন্ন ক্যাটারির মিশ্রণে ভিডিও পোস্ট করা তাহলে সে আপনার চ্যানেলের আর কোনো ভিডিও দেখবে না।এজন্য যে কোনো একটা ক্যাটাগরির ভিডিও পোস্ট করা ভালো,ফলে এক ভিডিও থেকে অন্য আরেকটা ভিডিওতে খুব সহজে ভিজিটর পাবেন।এছাড়াও যদি অন্য ক্যাটাগরির পোস্ট করতে চান সেক্ষেত্রে playlist তৈরি করে দিতে পারেন।
প্রথমে ইউটিউব স্টুডিও ওপেন করেবেন পরবর্তীতে আপনার চ্যানেলে বেসিক কিছু জিনিস সেটআপ করবেন।যেমনঃ- ডেসক্রিপশন,ইমেইল এবং বিভিন্ন সোসাল মিডিয়া লিংক যুক্ত করা ইত্যাদি।এগুলোই হলো ইউটিউব চ্যানেলের বেসিক সেটিং।
ইউটিউব মনিটাইজেশন পেতে শর্ত
আমরা সবাই অনেক আাশা নিয়ে ইউটিউব চ্যানেল খুলি,যে আমি এখানে থেকে টাকা ইনকাম করবো।কিন্তু সে ইনকামের আশা শেষ পর্যন্ত ধরে রাখতে পারি না যার কারণে আমরা এখান থেকে ইনকাম করতে বেশির ভাগ মানুষ ব্যার্থ হই।আপনাকে ইউটিউব থেকে ইনকাম করতে চাইলে ইউটিউবের কিছু নিয়ম মানতে হবে এবং কিছু শর্ত পূরণ করতে হবে। নিম্নে সেগুলো তুলে ধরা হলোঃ-
- আপনার চ্যানেলে ১০০০ হাজার সাবসক্রাইবার থাকতে হবে।
- ১ বছরে ৪,০০০ ঘন্টা watch time থাকতে হবে।
- ইউটিউবের কোনো নীতিমালা ভঙ্গ করা যাবে না।
- কোনো কপিরাইট কন্টেন্ট থাকা যাবে না।সব কন্টেন্ট ইউনিক হতে হবে অর্থাৎ, নিজের কন্টেন্ট।
- আপনার যে জিমেইলে ইউটিউব খোলা সেটা 2 step verify থাকতে হবে।
ইউটিউব চ্যানেল খোলার পর ব্র্যন্ডিং সেটআপ
একটা ইউটিউব চ্যানেল খোলার পরে ব্রান্ডিং সেটআপ করা জরুরি। কারণ: আপনার ব্রান্ডিং ভালোভাবে সেটআপ থাকলে দর্শকদের কাছে অনেক আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে।এতে করে আপনার চ্যানেল গ্রো করার সম্ভাবনা অনেক গুণ বেড়ে যাবে।
ব্রান্ডিং সেটআপ বলতেঃ আপনার ইউটিউব চ্যানেলের লোগো এবং ব্যানার সেট করা।শুধুমাত্র লোগো এবং ব্যানার সুন্দর করে দিলেই আপনার চ্যানেল দ্রুত grow করবে এমন টা না।আপনার চ্যানেল grow করার জন্য প্রয়োজন ভালো কন্টেন্ট। আপনার কন্ট্রোল যত ভালো হবে ততো ভিউ আসবে।আপনি চাইলে আপনার ভিডিও তে ছোট করে আপনার লোগো বসিয়ে দিতে পারেন।এটা দেখতে অনেক সুন্দর লাগে।
তাই লোগো,ব্যানার খুব সহজে canva,Pixel lab, Photoshop ইত্যাদি দিয়ে বানিয়ে নিতে পারবেন।
ইউটিউব চ্যানেল প্রমোশন করার টিপস
আপনার ইউটিউব চ্যানেলের ভিউ বাড়ানোর জন্য অর্থাৎ,আপনার চ্যানেলটিকে প্রমোশন করার জন্য কিছু টিপস রয়েছে যেগুলো ফলো করলে আপনার সহজেই ভিউ বাড়াতে পারবেন।
- SEO-শুধু ভিডিও পোস্ট করলেই হবে না।ভিডিও ভালো করে SEO করতে হবে।যাতে কেউ কোনো কিছু সার্চ করলে ঐবিষয়ে আপনার ভিডিও সবার প্রথমে আসে।SEO হলোঃ টাইটেল,ডেসক্রিপশন,ট্যাগ ইত্যাদি।
- CTA- ভিডিও তে লাইক,কমেন্ট,সাবক্রইব করতে বলা।
- Embedded - ভিডিও টা embed করা ওয়েবসাইটে বা ব্লগ পোস্টের মধ্য ভিডিও এড করা।
- playlists - চ্যানেলে প্লেলিস্ট তৈরি করে ক্যাটাগরি ভাগ করে রাখা।
- সোসাল মিডিয়া- বিভিন্ন সোসাল মিডিয়ায় ভিডিও শেয়ার দেওয়া।যেমন: ফেজবুক, ইনস্টাগ্রামে ইত্যাদি।
লেখকের শেষ মন্তব্য
আমরা আজকের আর্টিকেলের মধ্যে প্রফেশনাল ভাবে ইউটিউব চ্যানেল খোলা থাকে শুরু করে মনিটাইজেশন পাওয়া জন্য করণীয় গুলো তুলে ধরেছি। এছাড়াও, ইউটিউব চ্যানেলের সেটিং গুলো তুলে ধরেছি।
আশা করি আর্টিকেল টি আপনার ভালো লেগেছে এবং আপনি আপনার চ্যানেলটি খুলাতে পারবেন।এতক্ষণ সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।
আর্টিকেল টি ভালো লেগে থাকলে নিম্নে থাকা সোশাল মিডিয়ার মাধ্যমে বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন, যাতে তারাও জানতে পারে।
রিফাত আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url