বিয়ে: আশীর্বাদ না অভিশাপ? জেনে নিন বিয়ের উপকারিতা ও অপকারিতা

১৩ টি বিষয় গুগলে ভুলেও সার্চ করবেন নাবিয়ে মানুষের জীবনে একটি বড় সিধান্ত।বিয়ে শুধুমাত্র একজনকে ঘরে তোলা নয়।বিয়ে মনে দায়িত্ব,বোঝাপড়া এবং স্বামী,স্ত্রী সারাটা জীবন একসাথে কাটানোর একটা অঙ্গীকার।

বিয়ে: আশীর্বাদ না অভিশাপ? বিয়ের উপকারিতা ও অপকারিতা

অনেকেই মনে করে বিয়ে করা অভিশাপ আবার অনেকেই মনে করেন বিয়ে করা আর্শীবাদ।কিন্তু সবার জীবন একরকম নয়।আপনিও যদি জানতে চান বিয়ে আর্শীবাদ না অভিশাপ? বিয়ে করার উপকারিতা ও অপকারিতা তাহলে আজকের আর্টিকেল টি আপনার জন্য।

সূচিপত্রঃ বিয়ে: আশীর্বাদ না অভিশাপ? জেনে নিন বিয়ের উপকারিতা ও অপকারিতা

বিয়ে: আশীর্বাদ না অভিশাপ? জেনে নিন বিয়ের উপকারিতা ও অপকারিতা

আজকে বিয়ে করার উপকারিতা ও অপকারিতা জানবো।বিয়ে একটা মানুষের জীবনে গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়।জীবনে একা পথ চলা সম্ভব না।বিয়ে শুধুমাত্র একটা সামাজিক নিয়ম নয়,বিয়ে করার মাধ্যমে একজন নারী এবং একজন পুরুষ সারাজীবন একে অপরের পাশে থাকেন,সুখ দুঃখের সময় একে অপরের পাশে থাকেন এবং বিয়ে করার সবচেয়ে বড় উপকারিতা- একজন মনের মানুষ পাওয়া যায়।যার সাথে ভালো এবং মন্দ সবকিছুই শেয়ার করা যায়।

বিয়ে করলেই জীবনের সুখ শান্তি ধ্বংস হবে এমনটা নয়।বিবাহ করার মাধ্যমে একজন ব্যাক্তি সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হন এবং দীর্ঘ জিবি হন।অনেকেই প্রেম করেন কিন্তু বিয়ে করেন না।তাদের বেকার এবং অনিশ্চিত ভবিষ্যৎতের কথা মাথায় রেখে তারা বিয়ে টাকে দূরে ঠেলে দেয়।অবিবাহিত প্রেমে সবাই যে অনেক সূখী এমন টা না। পছন্দের মানুষকে বিয়ে করতে না পারা এছাড়াও, বিভিন্ন ধরণের টেনশনে থাকেন অনেকেই।

অবিবাহিত এবং বিবাহিত জীবনে সেক্স একটা গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর।এসব চাপ অনেক সময় মনের মধ্যে ভর করে,যার ফলে শরীরে অনেক ক্ষতি হয়।সমীক্ষা করে দেখা গিছে, শতকরা ৯৪ জন দাম্পতী বিয়ে করার পরে নিশ্চিন্ত।শুধুমাত্র বিয়ের পরে দাম্পত্য জীবন মধুর না,সন্তান জন্মদানের পরে তাদের দাম্পত্য জীবন আরও মধুর।

বিয়ে করার উপকারিতা অর্থাৎ ভালো দিক

বিয়ে করার উপকারিতা অর্থাৎ ভালো দিকগুলো নিম্নে তুলে ধরা হলোঃ- 

  • দীর্ঘজীবি জীবনঃ বিয়ে করলে মানুষ দীর্ঘ জিবি হয়।পরিসংখ্যানে দেখা গিছে বিবাহিতদের তুলনায় অবিবাহিতদের মৃত্যুর হার প্রায় দ্বিগুণ।আর,বিবাহিত জীবনে একে অপরের যত্ন নেয়।এছাড়াও,ভবিষ্যৎতে বুড়ো হয়ে গেলে যাতে ভালো থাকতে পারেন তাই দাম্পতিরা সন্তান জন্ম দেন।তাই অভিজ্ঞরা,দীর্ঘ জিবী হতে হলে বিয়ে করার পরামর্শ দিয়েছেন।তবে,জীবন সঙ্গী নির্বাচন করার ক্ষেত্রে আদর্শ জীবন সঙ্গী নির্বাচন করতে হবে।তা না হলে দাম্পত্য জীবন সুখী হবে না।
  • যৌন জীবনে রোগের ঝুকি কমঃ বিবাহিত দাম্পতিরা একে অপরেরকে ভালোবাসেন এবং তারা প্রতিনিয়ত যৌন সুখ উপভোগ করতে পারেন।এজন্য তাদের যৌনসঙ্গী খোজার প্রয়োজন পড়ে না।এতে করে দাম্পত্য জিবন হয় মধুর।যার ফলে যৌন রোগ হওয়ার ঝুঁকি কম থাকে।
  • ভালো স্বাস্থ্যঃ বিয়ে করার মাধ্যমে দাম্পতিরা স্বাস্থ্যগত দিক থেকে অনেক সুবিধা পান।বিয়ে করার মাধ্যমে একজন আরেকজনের সুখে দুঃখের সময় সঙ্গ দেয়।এতে করে তারা মানসিক ভাবে স্বস্তি পায়।অন্যদিকে অবিবাহিতরাও অনেক সময় পেসারের মধ্যে দিয়ে যায়।তখন তাদের পাশে একমাত্র মা-বাবা ছাড়া কেউ থাকে না।কিন্তু পরিবারের কাছে সবসময় সব কথা শেয়ার করা যায় না।যার ফলে তারা নানারকম বিষণ্নতায় ভোগে।এজন্য বিয়ে করার মাধ্যমে স্বাস্থ্য ভালো থাকে।
  • সামাজিক এবং ধর্মীয় বৈধ পন্থায় মানব বংশের বিস্তার ঘটে।
  • হযরত মোহাম্মদ (স.) সহ সকল নবির বাণী বিবাহ করা সুন্নত।বিবাহের মাধ্যমে সুন্নত পালন করা হয়।
  • শিশু জন্মের পর তার পিতা-মাতার প্রকৃত পরিচয় লাভ করতে পারে।
  • বিয়ের মাধ্যমে একজন নারী এবং পুরুষের যৌন সম্পর্কের বৈধতা নিশ্চিত হয়।
  • বিয়ের মাধ্যমে নিজেকে গুনাহ এবং পাপ কাজ থেকে দূরে রাখা যায়।
  • পরিবার পরিজনের সাথে,শিশু জন্মের পরে সুস্থভাবে বেড়ে উঠতে পারে।
  • মানুষ অবৈধ সম্পর্কে জড়ায় না,ফলে সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয় না।
  • বিয়ের মাধ্যমে সম্পদে বরকত আসে।রাসুল (স.) বলছেন-তোমরা বিয়ে করো,স্ত্রীর স্বীয় ভাগ্য তোমার কাছে বরকত টেনে আনবে।
  • খারাপ অভ্যাস ত্যাগঃ অনেক পুরুষ নানারকম নেশায় আসক্ত থাকে এছাড়াও,চুরি,ডাকাতি,মারামারি ইত্যাদি খারাপ কাজে যুক্ত থাকে।বিয়ে করার মাধ্যমে অনেকেই স্ত্রীর ভালোবাসা এবং সন্তান সন্ততির কথা চিন্তা করে এসব খারাপ কাজ ছেড়ে দেয়।

বিয়ে করার অপকারিতা অর্থাৎ, মন্দ দিক

বিয়ে করার অপকারিতা অর্থাৎ, মন্দ দিক

বিয়ে করার অপকারীতা মূলত মেয়েদের বেশি তবে সব মেয়েদের ক্ষেত্রে না।বর্তমান সময়ে বেশির ভাগই বাল্য বিবাহ হয়।অল্প বয়সে মেয়েদের বিয়ে হলে তাদের নানারকম সমস্যা হতে পারে।আর ছেলেদের ক্ষেত্রে তেমন সমস্যা নাই।এখন বিয়ে করার অপকারীতা অর্থাৎ,বিয়ে করার মন্দ দিকগুলো জেনে নিই।

মেয়েদের বিয়ে করার অপকারীতা

  • অল্প বয়সে মেয়েদের বিবাহ হলে গর্ভ ধারণের কারণে তাদের স্বাস্থ্য হানি দেখা দিতে পারে।
  • রক্তস্বল্পতা,অপুষ্টি ছাড়াও আরও অন্যান্য সমস্যা হতে পারে।
  • মনসিকভাবে পরিক্কতার অভাবে,দাম্পত্য জীবনে বিভিন্ন ঝামেলার সম্মুখিন হতে পারে।
  • ছোট হওয়ার ভয় পেতে পারে এবং মানসিক চাপ,বিষন্নতায় ভুগতে পারে।
  • অল্প বয়সের ফলে স্বামী এবং স্ত্রীর মধ্যে মতে পার্থক্য দেখা দিতে পারে।যার ফলে সংসারে অশান্তি এবং সম্পর্ক টিকে নাও থাকতে পারে।

ছেলেদের বিয়ে করার অপকারীতা

ছেলেদের বিয়ে করার অপকারীতা- অল্প বয়সে ছেলেদের বিয়ে করলে বিভিন্ন ধরণের সমস্যা সম্মুখীন হতে হবে।যেমন:- তারা যদি আর্থিক ভাবে সাবলম্বী না হয় তাহলে,তাদের সংসার ঠিক মতো চলবে না।ফলে সংসারে প্রনিয়ত ঝগড়াঝাঁটি হতে পারে এবং শেষ পর্যন্ত সংসার না টিকার সম্ভাবনা বেশি।তাই ছেলেদের অল্প বয়সে বিয়ে করলেও যদি তার ইনকামসোর্স থাকে।অর্থাৎ,সে যদি সংসারে ভার বহন করতে পারে তাহলে তেমন কেনো সমস্যা হবে না।

তবে সবারই উচিত আর্থিক ভাবে সাবলম্বী হয়ে এবং প্রাপ্ত বয়স্ক হয়ে বিয়ের আসনে বসা

বিয়ের আগে কোন বিষয়গুলো ভাবা উচিত

বিয়ে মানুষের জীবনের একটি বড় সিধান্ত।এই বড় সিধান্ত হুট হাট করে কারও নেওয়া উচিত না।বিয়ে করার আগে যে বিষয়গুলো ভাবা উচিত তা নিম্নে তুলে ধরা হলোঃ- 

  1. প্রথমত আপনি যাকে বিবাহ করবেন তাকে আপনার পছন্দ হয়েছে কিনা এবং সেও আপনাকে পছন্দ করেছে কিনা।
  2. আপনি যে মেয়েকে বিয়ে করবেন সে ফ্যামিলি কেমন।আপনার ফ্যামেলি থেকে যদি তারা আরও বড়লোক ফ্যামেলি হয়।তাহলে আপনি সে ফ্যামেলির মেয়ে বিয়ে করে,তার চাহিদা পূরণ করতে পারবেন কিনা। যদি না পরেন তাহলে বিবাহ করবেন না,এতে করে দাম্পত্য জীবনে অসুখী হবেন।
  3. দুই পরিবারের সাংস্কৃতির মিল থাকাটাও জরুরী।

বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ বিবাহ হলো দুইজনের মনে বোঝাপড়া।অর্থাৎ,বিবাহ দুইজন ব্যাক্তির মধ্যে,একে অপরের প্রতি দৃঢ় বিশ্বাস আর ভালোবাসার উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠে।তাই আপনি বিয়ে করার আগে এগুলো ক্লিয়ার হয়ে নিন।

বিয়ে করার জন্য প্রস্তুত কিনা কিভাবে বুঝবো

আপনি বিয়ে করার জন্য প্রস্তুত কিনা কিভাবে বুঝবেন?- বিয়ে করার জন্য প্রথমে দেখতে হবে আপনি মানসিকভাবে প্রস্তুত কিনা? দ্বিতীয়ত- আপনার প্রতিদিন ইনকাম আছে কিনা? তৃতীয়ত- আপনি দুঃখ,কষ্ট এবং দাম্পত্য জীবনের ভার সহ্য করতে।পারবেন কিনা? চতুর্থ বিষয়- আপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ঠিক আছে কিনা? পঞ্চম বিষয়- নিজের সপ্ন,ক্যারিয়ারের সাথে নিজেকে খাপ খায়িয়ে নিতে পারবেন কিনা? 

এসকল প্রশ্নের উত্তর যদি আপনার কাছে হ্যা হয় তাহলে আপনি বিয়ে করতে পারেন এবং যদি আপনার কাছে মনে হয় প্রস্তুত না তাহলে আরও কিছু দিন সময় নিন তারপরে বিয়ে করার চিন্তা করুন

বিয়ে করলে সমস্যা বাড়ে না কমে

বিয়ে করলে সমস্যা বাড়বে না কমবে- এটা এক একজন ব্যাক্তির কাছে এক একরকম মনে হবে।কেউ বলবে সমস্যা বাড়ে আবার কেউ বলবে ভালো।

বিয়ে করলে সমস্যা বাড়ে না কমে?

তবে বিয়ে করলে আপনাকে কিছু সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে।যেমন- বিয়ে করলে আপনার উপর একটা পরিবারের ভার আসবে।তখন আপনাকে আপনার পরিবারের ভার সামলাতে হবে।

বিয়ে মানে ২জন ব্যাক্তি একসাথে চলা।দুইজন ব্যাক্তির চলার পথে নানারকম সমস্যা হতেই পারে।এটা স্বাভাবিক-কারণ দুইজন মানুষের চিন্তা চেতনা একরকম নয়,মতের বিরোধ দেখা দিবে।কিন্তু বিয়ে সমস্যা বাড়ায় না বরং যে কোনো বিপদ মোকাবিলায় শক্তির সঞ্চার করে।দুইজন দুইজনের সুখ,দুঃখ শেয়ার করে পাশে থাকা যায় এতে একে অপরের প্রতি সহানুভূতি বাড়ে।

আর,একা জীবন কাটালে নানারকম বিষণ্ণতায় ভর করে।আর বিয়ে করলে একজন আরেকজনের পাশে থাকে,যে কোনো সমস্যায় পাশে থাকে এবং উৎসাহ দেয়।অর্থাৎ,বিয়ে সমস্যা বাড়ায় না বরং যে কোনো বিপদ মোকাবিলায় শক্তির সঞ্চার করে।তবে এটি তখনই সম্ভব,যদি দাম্পত্য জীবন মধুর হয়।এক অপরের প্রতি মিল মোহাব্বত থাকে।

শেষ মন্তব্য

আজকের আর্টিকেলে বিয়ে: আশীর্বাদ না অভিশাপ? জেনে নিন বিয়ের উপকারিতা ও অপকারিতাবিয়ের আগে কোন বিষয়গুলো ভাবা উচিত ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা করেছি।আশা করি আর্টিকেল ভালো লেগেছে।

বিয়ে করলে সংসারে সমস্যা সৃষ্টি হবে এবং আবার সে সমস্যা সমাধানও হবে তাই,পরস্পরের মিলেমিশে থাকা উচিত।আর  খারাপ  দিকগুলো  মোকাবিলা  করতে  হবে এবং নিজেকে বিয়ের জন্য প্রস্তুত করে তারপরে বিয়ে করা উচিত।
আর্টিকেল টি ভালো লাগলে বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

রিফাত আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url