১০ বছর মেয়াদি ই-পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে ও আবেদন পদ্ধতি জানুন

লাল পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে জেনে নিনআসসালামু ওয়ালাইকুম, আশা করি উপরের টাইটেল-টি দেখেই বুঝতে পারছেন,আজকের আলোচনার বিষয়। আজকের আলোচনায় থাকছে ১০ বছর মেয়াদি পাসপোর্ট করতে যা যা লাগে এবং পাসপোর্ট অনলাইনে আবেদন করার নিয়ম।

১০ বছর মেয়াদি ই-পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে ও আবেদন পদ্ধতি জানুন

পড়ালেখা,ব্যবসা বা যে কোনো কাজে আপনি যদি বাইরের কোনো দেশে যেতে চান তাহলে আপনার পাসপোর্টের প্রয়োজন হবে। অনেকেই কাজের জন্য প্রবাসে যায়।তারা অনেকেই যানেন না,১০ বছর মেয়াদি পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে? জানতে হলে, আজকের এই আর্টিকেল ভালোভাবে শেষ পর্যন্ত পড়ুন।

পোস্টের সূচিপত্রঃ- ১০ বছর মেয়াদি পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে ২০২৫

১০ বছর মেয়াদি পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে ২০২৫

বর্তমান বাংলাদেশের দুই ধরনের পাসপোর্ট ইস্যু চালু আছে।পাঁচ বছর মেয়াদী পাসপোর্ট এবং 10 বছর মেয়াদী পাসপোর্ট।আপনি যদি কোন দেশে ভ্রমণের জন্য অথবা শিক্ষার সফর এ ধরণের কোনো কাজে যেতে চান তাহলে পাঁচ বছর মেয়াদী পাসপোর্ট করাই ভালো সে ক্ষেত্রে আপনার খরচ একটু কম লাগবে।

কিন্তু আপনি যদি কর্মসংস্থানের জন্য যেতে চান সেক্ষেত্রে খরচ একটু বেশি হলেও ১০ বছর মেয়াদি পাসপোর্ট করা ভালো।আপনি ৫ বছর অথবা ১০ বছর যেকোনো মেয়াদি পাসপোর্ট করুন না কেন? আপনার কিছু ডকুমেন্টস প্রয়োজন। নিম্নে যে ডকুমেন্টস প্রয়োজন তুলে ধরা হলোঃ-

  • ভোটার আইডেন্টি কার্ডের ফটোকপি। আর বয়স যদি ১৮ বছরের কম হয় সেক্ষেত্রে জন্ম নিবন্ধন কাগজের ফটোকপি।
  • স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের থেকে নাগরিক সনদপত্র।
  • পুরানো পাসপোর্টের (MRP) কপি।
  • বিবাহিত হলে তার কামিন নামা।
  • পেশার প্রমাণ পত্র।
  • সরকারি চাকুরিজীবী হলে NOC/GO এর প্রমাণ।
  • আবেদন ফি পরিশোধ করেছেন তার রশিদ।

১০ বছর মেয়াদি ই-পাসপোর্টের আবেদন ফি

পাসপোর্ট মূলত ২ ধরণের হয়ে থাকে।যেমনঃ ৪৮ পৃষ্ঠার এবং ৬৪ পৃষ্ঠার। ১০ বছর মেয়াদি এই ২ ধরনের পাসপোর্ট করা যায়।এখন আপনার ৩ টা ক্যাটাগরির উপর ভিত্তি করে টাকা কমে বেশি হতে পারে। তাই চলুন এবার টাকার পরিমাণ জেনে নিই।

৪৮ পৃষ্ঠার পাসপোর্ট

রেগুলার ডেলিভারির সময় ১৫ কার্যদিবস এবং ফি ৫,৭৫০ টাকা, জরুরি পাসপোর্ট ডেলিভারি সময় ৭ কার্যদিবস এবং ফি ৮,০৫০ টাকা,অতি জরুরি পাসপোর্ট ডেলিভারি সময় ২ কার্যদিবস এবং ফি ১০,৩৫০ টাকা।

৬৪ পৃষ্ঠার পাসপোর্ট

রেগুলার ডেলিভারির সময় ১৫ কার্যদিবস এবং ফি ৮,০৫০ টাকা, জরুরি পাসপোর্ট ডেলিভারি সময় ৭ কার্যদিবস এবং ফি ১০,৩৫০ টাকা,অতি জরুরি পাসপোর্ট ডেলিভারি সময় ২ কার্যদিবস এবং ফি ১৩,৮০০ টাকা।

অনলাইন আবেদনের জন্য একাউন্ট তৈরি

আপনার পাসপোর্টের আবেদনের জন্য প্রথম ধাপ হলো e-passport সাইটে প্রবেশ করা এবং একটি একাউন্ট করা।কিভাবে একাউন্ট তৈরি করবেন চলুন পয়েন্ট আকারে জেনে নিই।

  • আবেদনের জন্য আপনার ফোন অথবা কম্পিউটারের যে কোনো একটি ব্রাউজার দিয়ে পাসপোর্ট অফিশিয়াল সাইটে প্রবেশ করুন।সাইটে প্রবেশের জন্য সার্চ করুন "https://www.epassport.gov.bd/"।
  • সার্চ করে সাইটে প্রবেশ করার পরে মেনু বার থেকে online apply-বাটনে ক্লিক করুন।
  • Online apply বাটনে ক্লিক করার পরে আপনাকে একটা নতুন পেজ ওপেন হবে।সেখানে আপনাকে জিজ্ঞাসা করবে-( are you applying for Bangladesh)। আমি যদি বাংলাদেশে থেকে থাকেন তাহলে Yes দেন।আর তখন যদি অন্য কোনে দেশে অবস্থান করেন তাহলে No সিলেক্ট করেন, যে দেশে অবস্থান করতেছেন সে দেশের নাম দিয়ে সাবমিট করে দেন।
  • দেশ সিলেক্ট করার পরে যে পেজ আসবে সেখানে একটা valid ইমেইল চাইবে।তখন একটা Valid ইমেইল দিয়ে ক্যপচা পূরণ করে continue তে ক্লিক করুন।
  • পরবর্তীতে আপনার ৬ সংখ্যার পাসওয়ার্ড, ফোন নাম্বার এবং জাতীয় পরিচয়পত্রে যে নাম দেওয়া আছে সেই নাম দিয়ে account create করুন।
  • Create account ক্লিক করার পরে আপনার ইমেইলে একটা ভেরিফিকেশন লিংক আসবে।সেই লিংকে ক্লিক করে ভেরিফাই করে নিন।এখন আপনার পাসপোর্ট আবেদনের জন্য একাউন্ট তৈরি করা সাকসেসফুলি।

অনলাইনে আবেদন করার নিয়ম

দশ বছর মেয়াদি পাসপোর্ট করার জন্য অনলাইন আবেদন পদ্ধতি নিম্নে তুলে ধরা হলোঃ- 
  • আপনার একাউন্ট তৈরি সম্পন্ন হলে যে ইমেইল দিয়ে একাউন্ট তৈরি করেছিলেন সেই ইমেইল এবং পাসওয়ার্ড দিয়ে sign in করে নিন।
  • "sign in" করার পরে "apply for e-passport for online ক্লিক করুন। তারপরে পাসপোর্ট টাইপ সিলেক্ট করুন এবং save করুন অথবা continue ক্লিক করুন।
  • তারপরে আপনার জাতীয় পরিচয়পত্র অনুসারে বর্তমান ঠিকানা এবং স্থায়ী ঠিকানা দিয়ে সেভ করুন। এবার যে কাজ টি করবেন সেটা খুব গুরুত্বপূর্ণ।
  • এবার আপনাকে জিজ্ঞেস করা হবে আগে কোনো পাসপোর্ট আছে কিনা? না থাকলে No I don't have any passport সিলেক্ট করুন। আর যদি আগে পাসপোর্ট করা থাকে তাহলে সেটি সিলেক্ট করুন।এক্ষেত্রে আপনাকে উল্লেখ করে দিতে হবে আপনি আবার কেন পাসপোর্ট আবেদন করতেছেন।এরপরে আপনার অন্য কোনো দেশের পাসপোর্ট আছে কিনা সেটা জানতে চাওয়া হবে।যদি থাকে তাহলে সেই পাসপোর্টের নাম্বার দিতে হবে।এরপরে আপনার NID কার্ডের নাম্বার দিতে হবে।তারপরে save অথবা continue বাটনে ক্লিক করুন।
  • তারপরে আপনার পিতা-মাতার তথ্য চাওয়া হবে।এখানে আপনার পিতা মাতার তথ্য দিয়ে save করুন।তবে পিতা-মাতার তথ্য আপনার NID কার্ড অনুযায়ী দিবেন।
  • তারপরে আপনার লোকাল গার্ডিয়ানের তথ্য চাওয়া হবে। এটা দত্তক নেওয়া লোকদের ক্ষেত্রে লাগবে।আপনার যদি এমন তথ্য না থাকে তাহলে আপনি save করে নিবেন।
  • তারপরে ইমারজেন্সি কন্টাক্ট পেজে নিয়ে যাবে।আপনি যাকে রাখতে চান তার তথ্য সঠিক ভাবে পূরণ করে Save করুন।
  • তারপরে আপনার পাসপোর্টের ইনফরমেশন চাওয়া হবে।আপনি ৫ বছর নাকি ১০ বছরের জন্য করতে চাচ্ছেন এবং কত পৃষ্ঠার পাসপোর্ট করতে চাচ্ছেন সেটা জানতে চাওয়া হবে।আপনার প্রয়োজন মতো আপনি সিলেক্ট করে দিবেন।আমরা যেহেতু ১০ বছর মেয়াদি দেখাচ্ছি সেহেতু ১০ বছর সিলেক্ট করে এবং পেজ ৪৮-৬৪ সিলেক্ট করে save করে দিতে হবে।
  • তারপরে আপনি কত দিনের মধ্যে পাসপোর্ট চাচ্ছেন সেটা সিলেক্ট করে save করতে হবে।
  • তারপরে আপনি যে তথ্য গুলো সাবমিট করবেন তার একটা ভিউ আপনার সামনে আসবে। যদি কোনো তথ্য ভুল থাকে তখন ঠিক করে নিবেন।যদি সব কিছু ঠিক থাকে তাহলে conform and proceed to payment বাটনে ক্লিক করুন এবং আপনার পেমেন্ট করে দিলেই আপনার আবেদন successful হবে।

লেখকের শেষ মন্তব্য

আমরা এই আর্টিকেলের মধ্যে ১০ বছর মেয়াদি ই-পাসপোর্ট করতে যা যা লাগে এবং আবেদন প্রক্রিয়া তুলে ধরেছি। আপনি যদি সম্পূর্ণ আর্টিকেল মনোযোগ দিয়ে পড়েন। আশা করি বুঝতে পারছেন। এতক্ষণ সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

রিফাত আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url
Sazid Hassan Rifat
Sazid Hassan Rifat
আমি সরকারী শহীদ সিরাজউদ্দীন হোসেন মহাবিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থী। আমি নিয়মিত লাইফ স্টাইল, অনলাইন ইনকাম, টেকনোলজি ও ই সার্ভিস নিয়ে লেখালেখি করি।নিয়মিত নতুন বিষয় নিয়ে লিখে যাচ্ছি যেন সবাই কিছু না কিছু শিখতে পারে। আপনাদের সামনে সকল প্ররকারের সঠিক এবং নির্ভুল তথ্য তুলে ধরার মাধ্যমে সাহায্য সহযোগিতা করাই আমার মূল উদ্দেশ্য। ধন্যবাদ।।