চুলের যত্নে পেঁয়াজের গুণাগুণ এবং পেঁয়াজ ব্যবহারের সঠিক নিয়ম

৭ দিনে ১০ কেজি ওজন কমানোর উপায়সুপ্রিয় পাঠক সকলকে নতুন প্রতিবেদনে স্বাগতম। আজকের আলোচনায় থাকতে চুল সম্পর্কিত। বর্তমান সময়ে খুব সাধারণ একটি সমস্যা চুল পড়া তাই এই সমস্যা হতে মুক্তি পেতে চুলের যত্নে পেঁয়াজের গুণাগুণ এবং পেঁয়াজ ব্যবহারের সঠিক নিয়ম- সম্পর্কে কিছু টিপস জানাবো তাই প্রতিবেদনটির শুরুতে শেষ অবদ্ধি সাথেই থাকুন।

চুলের যত্নে পেঁয়াজের গুণাগুণ এবং পেঁয়াজ ব্যবহারের সঠিক নিয়ম

চুল মানবদেহের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে তাই চুলের যত্নে আমাদের সচেতন হওয়া একটি জরুরি বিষয়। চুল পড়ে যাওয়ার জন্য বিভিন্ন কারণ হতে পারে তার মধ্যেও উল্লেখযোগ্য কারণ হচ্ছে হরমোন, আয়রনযুক্ত পানির ব্যবহার এবং ভিটামিনের অভাব সহ কিছু বেখেয়ালির জন্য মূলত এই সমস্যা বেশি দেখা যায়। তাই চুল সম্পর্কিত আরো বিস্তারিত জানতে নিম্নবর্গের অনুচ্ছেদ গুলো পড়ুন এবং খুব সহজেই জেনে নিন চুলের যত্নে পেঁয়াজের গুণাগুণ এবং পেঁয়াজ ব্যবহারের সঠিক নিয়ম

পোস্টের সূচিপত্রঃ- চুলের যত্নে পেঁয়াজের গুণাগুণ এবং পেঁয়াজ ব্যবহারের সঠিক নিয়ম

চুলের যত্নে পেঁয়াজের গুণাগুণ এবং পেঁয়াজ ব্যবহারের সঠিক নিয়ম

আমরা ইতিপূর্বেই উপরিক্ত শিরোনাম দেখেই একটি বিষয়ে অবগত হয়েছি যে আজ কোন কোন বিষয়ে কথা বলব। যাই হোক এখন আমরা মূল আলোচনায় আসি। চুল পড়া বন্ধ করতে কিছু বিষয়ে আমাদের মাথায় রাখতে হবে যে ঠিক কোন কোন কারণে এমন সমস্যা দিনে দিনে বেড়েই চলেছে। তাই প্রথমে জানতে হবে কেন চুল পড়ে যাচ্ছে?চুল পড়ে সাধারণত হরমোন জনিত কারণে এটি বেশি হয়। শরীরে যখন টেস্টাস্টরন, থাইরয়েড, প্রেগনেন্সি হরমোন সহ স্ট্রেস হরমোন জনিত কারণে চুল আকালে ঝরে যায়।
এছাড়াও বাজারকৃত কেমিক্যাল পূর্ণ তেল ব্যবহার সহ বিভিন্ন কারণে চুল পড়ে যায়।যাই হোক এখন আমরা চুল পড়া বন্ধ ও চুল ঘন করার জন্য পেঁয়াজের গুণাগুণ এবং পেঁয়াজ ব্যবহারের সঠিক নিয়ম জানবো।নিচে উপায়গুলো সুন্দরভাবে তুলে ধরা হয়েছে। তেল,পেয়াজ, এলোভের, চুল ঘন করার প্যাক, খাবার, হোমিও ঔষুধ এবং কিছু শ্যাম্পু ব্যবহারের মাধ্যমে চুল ঘন করা যায়। কিভাবে এগুলো ব্যবহার করবেন জানতে হলে নিম্নের লেখাগুলো পড়ুন।

পেয়াজ দিয়ে চুল ঘন করার উপায়

চুল পড়া প্রতিরোধ করতে অনেকেই হয়তো জানেন না, পেঁয়াজ কতটা গুরুত্ব ভূমিকা পালন করে।অল্প দিনেই ফল পাবেন হাতেনাতে! জানতে হবে, চুলের সমস্যায় পেঁয়াজের রসের সঠিক ব্যবহার।
বিশেষজ্ঞদের মতে, পেঁয়াজে আছে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টিফাঙ্গাল উপাদান এবং এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি, ভিটামিন বি৬-ও আছে। এ ছাড়াও পেঁয়াজে ফলিক অ্যাসিড থাকে যা আপনার শরীরে ক্যালশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, আয়রন এবং ফসফরাসের ঘাটতি পূরণ করবে। এই ধরনের উপাদান আপনার শরীরের জন্য অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ। আর তাই স্বাস্থ্য ভালো থাকলে আপনার চুলও ভালো থাকবে।এই সব উপকার পেতে পেয়াজ ৩ ভাবে ব্যবহার করতে পারেন।নিম্নে ব্যবহারের নিয়ম তুলে ধরা হলোঃ-
  •  সরাসরি পেঁয়াজের রস ব্যবহার
 প্রথমে খোঁসা ছড়িয়ে নিতে হবে এরপর  পেঁয়াজ  পেস্ট করে  রস  বের করে নিতে হবে। তারপর পেঁয়াজের রস মাথায় ভালোভাবে ম্যাসাজ করতে হবে। এই ম্যাসাজে চুলের স্ক্যাল্পে রক্ত সঞ্চালন বাড়ে। চুলের গোড়ায় ভালোমতো অক্রিজেন পৌছায়। বাকি রস এভাবে চুলের গোড়ায় লাগিয়ে নিতে হবে। ৩০ মিনিট পর শ্যাম্পু করে ফেলতে হবে।
এভাবে সপ্তাহে দুই থেকে তিনবার   পেঁয়াজের  রস  ব্যবহার করলে চুল পড়া কমে যাবে এবং চুলের ঘনত্ব বেড়ে যাবে।
অ্যালোভেরা জেলের সঙ্গে পেঁয়াজের রসের মিশ্রণ
  •  অ্যালোভেরা জেলের সঙ্গে পেঁয়াজের রসের মিশ্রণ
অ্যালোভেরা জেল চুলের রুক্ষ ভাব কমায়। চুল খুব ভালো রাখে। পেঁয়াজের রসের সঙ্গে অ্যালোভেরা জেল মিশ্রণ করে চুলে লাগালে ভালো ফল পাওয়া যায়। এজন্য একটি পাত্রে দুই টেবিল চামচ  অ্যালোভেরা  জেল ও তিন টেবিল চামচ পেঁয়াজের রস মিশ্রিত করে নিন। তারপর স্ক্যাল্পে এবং চুলের গোড়ায় ভালো করে এই মিশ্রণ লাগিয়ে ১০ মিনিট অপেক্ষা করুন এরপর ধুয়ে ফেলতে হবে। সপ্তাহে যদি এই মিশ্রণ তিনবার ব্যবহার করতে পারেন তাহলে হাতে নাতে ফল পেয়ে যাবেন।
  • পেঁয়াজের রসের সঙ্গে লেবুর রসের মিশ্রণ
খুশকির সমস্যা দূর করতে অনেক ভালো কাজ করে লেবুর রস।মাথার স্ক্যাল্প পরিষ্কার রাখতে পেঁয়াজের রস ও লেবুর রস ব্যবহারে অনেক ভালো ফলাফল পাওয়া যায়। এজন্য একটি পাত্রে এক টেবিল চামচ লেবুর রসের সাথে এক টেবিল চামচ পেঁয়াজের রস মিশিয়ে নিন এবং এটি স্ক্যাল্পে লাগিয়ে ম্যাসাজ করুন তারপর ২০ মিনিট রেখে ভালোভাবে মাথা পরিষ্কার করে ফেলুন।

 চুল ঘন করার তেলের নাম

আমরা ইতিমধ্যে উপরিউক্ত অনুচ্ছেদে চুলের যত্নে পেঁয়াজের গুণাগুণ এবং পেঁয়াজ ব্যবহারের সঠিক নিয়ম
সমূহ জেনেছি।এখন আমরা এই অনুচ্ছেদের মাধ্যমে জানবো কিছু জানা ও অজানা চুল গজানোর তেলের নাম সমূহ। আশা করব নিম্নকৃত তেলের নাম আপনার চুল পড়া রোধ করে নতুন চুল গজাতে সহায়তা করবে।বাজারে কিছু প্রাকৃতিক উপায় অবলম্বনে তৈরি তেল রয়েছে যা চুল বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে। তাই এমন কিছু তেলের নাম যদি আমরা এই অনুচ্ছেদের মধ্যমে একটি লিস্ট জেনে যাই তাহলে কেমন হয়।তাই চলুন সেসব পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া মুক্ত তেলের নাম জেনে নিই।
  1. অলিভ অয়েল
  2. রোজমেরি অয়েল
  3. কাস্টর তেল
  4. আলমন্ড অয়েল
  5. জবাফুল তেল
  6. ভ্রিংরাজ তেল


নিম্নে এই ৬ টি তেলগুলোর ব্যবহার বিধি তুলে ধরা হলোঃ-

  •  অলিভ অয়েলঃ
  • খেলে তো উপকার পাবেনই, তবে মাখলেও চুল লম্বা হবে। অলিভ অয়েলে রয়েছে নানা পুষ্টিকর উপাদান। অলিভ অয়েল চুলের জন্য অত্যন্ত কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে। মাথার ত্বকে রক্ত সঞ্চালন ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে এবং চুলের বৃদ্ধিও হয় মসৃণ ভাবে।

    • রোজমেরি অয়েলঃ
    ক্ষতিগ্রস্ত চুলের যত্নে রোজমেরি তেল। মাথার খুশকির সমস্যা দূর করে এবং এই তেলের রোজমেরিক এবং ক্যাফেইক অ্যাসিড মাথার ত্বকের রক্তসঞ্চালন সচল রাখতে সহায়তা করে, ফলে চুল ঝরার পরিমাণ অনেকটা কমে যায় এবং সেই সঙ্গে চুল লম্বাও হয়। নারকেল তেল অথবা অলিভ অয়েলের সঙ্গে কয়েক ফোঁটা রোজমেরি অয়েল মিশিয়ে চুলে মাখতে পারেন। ইনশাআল্লাহ, উপকার পাবেন
    • ক‍্যাস্টর অয়েলঃ
    ক্যাস্টর অয়েলে নতুন চুল গজাতে এবং চুল লম্বা করতে সাহায্য করে। মাথার ত্বকেএই তেল লাগালে বিভিন্ন ধরনের ফাঙ্গাল সংক্রমণের ঝুঁকি কম থাকে।
    • আমন্ড অয়েলঃ
    প্রাচীনকাল থেকে ব্যবহৃত একটি প্রাকৃতিক তেল যা ত্বক ও চুলের যত্নে কার্যকর ভুমিকা রাখে। আমাদের ফিটনেস লাইফের আমন্ড অয়েল, খাঁটি ও ফ্রেশ কাঠ বাদাম থেকে তৈরি হওয়ায়, ত্বক ও চুলের জন্য ভালো।
    • জবাফুল তেলঃ
    ঘন, কালো ও লম্বা চুল পেতে জবা ফুলের তেল ভীষণ কার্যকারী। কারনঃ- জবা ফুলে রয়েছে ভিটামিন সি, ভিটামিন-এ এবং অ্যামিনো অ্যাসিড। যা চুলকে স্বাস্থ্যোজ্জ্বল করতে, ভেঙ্গে পড়া বন্ধ করতে এবং চুলের প্রাকৃতিক রঙ ফিরিয়ে আনে এবং ঝলমলে করে তুলতে বিশেষ অবদান রাখে। এছাড়াও প্রাকৃতিক কন্ডিশনার হিসেবে কাজ করে জবা ফুল।
    • ভ্রিংরাজ তেলঃ
    চুলের জন্য ব্যবহার করে এবং এটা চাপ উপশম করতে ব্যবহার করা যেতে পারে। তেলের এমন কিছু বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা আপনাকে আরও শিথিল করতে সাহায্য করবে। এই তেলের সুগন্ধি একটু শান্ত প্রভাব ফেলে যা মানসিক চাপ কমায়। ভ্রিংরাজ তেল ম্যাগনেসিয়ামের মতো খনিজ সমৃদ্ধ হওয়ায় আপনার ঘুমের ধরণও অনেকটা উন্নত হবে।
    মেয়েদের তুলনায় ছেলেদের শরীরে হরমোনের পরিমাণ বেশি থাকায় চুল পড়া মেয়েদের তুলনায় একটু কম হয়ে থাকে।ছেলেদের চুল পড়ার অনেক কারণ রয়েছে তার মধ্যে বংশগত বা জেনেটিক্স,হরমোনের অভাবসহ বিভিন্ন কারণে হতে পারে।

    এখন আমরা জানবো ছেলেদের চুল ঘন করার তেলের নামসমূহ তা নিম্নে তুলে ধরা হলোঃ-

    1. নারকেল তেল (coconut oil)
    2. অর্গান তেল (Argan oil)
    3. অ্যাভোকডো তেল (Avocado oil)

    অ্যালোভেরা দিয়ে চুল ঘন করার উপায়

    অ্যালোভেরা চুল ঘন করার জন্য অনেক উপকারি।অ্যালোভেরা গাছ থেকে জেল বের করে মাথার ত্বকে লাগানো।এটিকে আপনার চুলের যত্নের রুটিনে অন্তর্ভুক্ত করার সবথেকে সহজ উপায়। একবার আপনার জেল হয়ে গেলে, নিম্নলিখিত উপায়ে এটি ব্যবহার করুন।
    • রাতারাতি স্প্রে
    আধা কাপ অ্যালোভেরার নির্যাস এক চতুর্থাংশ কাপ আদার রস মিশ্রিত করুন। মিশ্রণটি একটি স্প্রে বোতলে ভরে ফেলুন তারপর এটি আপনার মাথার ত্বকে স্প্রে করুন, এটি কমপক্ষে 20 মিনিটের জন্য ম্যাসাজ করুন এবং এটি সারারাত আপনার চুলে রাখুন।
    •  অ্যালোভেরা তেল
    অ্যালোভেরার জেল ব্লেন্ড করে সাথে একটু নারকেল তেল মিশিয়ে নিবেন।এখন ঐ মিশিয়ে নেওয়া জেল জ্বালিয়ে নিবেন,যতক্ষণ বুদ বুদ করে ফোটা বন্ধ না হবে। এখন তেলটি ঠান্ডা করবেন এবং সেঁকে নিবেন।তেল রেডি।প্রতিদিন রাতে ঘুমানোর সময় এটি ব্যবহার করবেন।
    • অ্যালো ভিনেগার DIY মাস্ক
    আপনি DIY হেয়ার মাস্কের জন্য অ্যালোভেরার জেল ব্যবহার করতে পারেন । আধা কাপ অ্যালোভেরা জেলের সাথে তিন টেবিল চামচ আপেল সাইডার ভিনেগার মিশিয়ে নিন। মিশ্রণটি মিশ্রিত করার পর এটি আপনার স্প্রে বোতলে ভরে ফেলুন। আলতোভাবে ম্যাসাজ করার সময় এটি চুল এবং মাথার ত্বকে লাগান।
    •  ক্যাস্টর অয়েল এবং অ্যালোভেরা
    যদি আপনার ক্ষতি হয়, শুষ্ক চুল বা খুশকি, ক্যাস্টর অয়েল এবং অ্যালোভেরা তেল ব্যবহার করতে পারেন। মিশ্রণটি চুলের স্বাভাবিকভাবে দীপ্তি বাড়ায়। এই উপাদানগুলি একত্রিত করুন এবং সেগুলো আপনার রুটিনে অন্তর্ভুক্ত করুন।

    লেখকের শেষ মন্তব্য

    আমরা আজকের আর্টিকেলের মধ্যে চুলের যত্নে পেঁয়াজের গুণাগুণ এবং পেঁয়াজ ব্যবহারের সঠিক নিয়ম,পেয়াজ দিয়ে চুল ঘন করার উপায়,চুল ঘন করার তেলের নাম,এলোভেরা দিয়ে চুল ঘন করার উপায় ইত্যাদি বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেছি।আশা করি পোস্ট পড়ে আপনি বুঝতে পারছেন।কোনটা করা আপনার জন্য ভালো।
    প্রতিদিন এমন সব তথ্য জানতে আমাদের সাইটে নিয়মিত ভিজিট করুন।এতক্ষণ সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।

    এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

    পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
    এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
    মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

    রিফাত আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

    comment url
    Sazid Hassan Rifat
    Sazid Hassan Rifat
    আমি সরকারী শহীদ সিরাজউদ্দীন হোসেন মহাবিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থী। আমি নিয়মিত লাইফ স্টাইল, অনলাইন ইনকাম, টেকনোলজি ও ই সার্ভিস নিয়ে লেখালেখি করি।নিয়মিত নতুন বিষয় নিয়ে লিখে যাচ্ছি যেন সবাই কিছু না কিছু শিখতে পারে। আপনাদের সামনে সকল প্ররকারের সঠিক এবং নির্ভুল তথ্য তুলে ধরার মাধ্যমে সাহায্য সহযোগিতা করাই আমার মূল উদ্দেশ্য। ধন্যবাদ।।