জাম কেন খাবেন? জাম আপনার শরীরের জন্য কতটা উপকারী জেনে নিন
শবে কদরের আমলগ্রীষ্মকালীন ফলের মধ্যে,জাম একটি অন্যতম ফল।রসে টসটসে পাকা কালো জাম খেতে কার না ভালো লাগে।জাম খেতে যেমন সুস্বাদু ঠিক তেমনই রয়েছে এর পুষ্টিগুণ।এই ফল গ্রীষ্মের সময় পেকে থাকে।জাম ফলে রয়েছে নানা রকম ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ।শুধু তাই নয়,এই ফলের রয়েছে নানারকম ওষুধি গুণ।
এজন্য,এই ফল সাস্থ্যোর জন্য অনেক উপকারী।তাই আমরা আজকের এই আর্টিকেলের মধ্যো,জাম কেন খাবেন? জাম আপনার শরীরের জন্য কতটা উপকারী এগুলো তুলে ধরেছি।জানতে চাইলে সম্পূর্ণ আর্টিকেল পড়ুন।
পোস্ট সূচিপত্রঃ- জাম কেন খাবেন? জাম আপনার শরীরের জন্য কতটা উপকারী জেনে নিন
জাম কেন খাবেন? জাম আপনার শরীরের জন্য কতটা উপকারী জেনে নিন
জাম একটি মৌসুমি ফল।জাম রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করে রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে।জাম খেলে পেট ঠান্ডা থাকে,যার ফলে হজম শক্তি বাড়ে।এছাড়াও জাম আমাদের ত্বকের জন্য বেশ উপকারী।জাম কেন খাবেন?
জামে রয়েছে বিভিন্ন ধরণের এসিডের উপস্থিতি।যেমন:অক্সালিক এসিড,ম্যালেয়িক এসিড,বেটুলিক এসিড ইত্যাদি।যা আপনার শরীরের ইনফেকশন দূর করতে সাহায্যে করবে।এছাড়াও জাম খেলে মুখের দুর্গন্ধ দূর হয় এবং দাত ও মাড়ি ভালো রাখে।শরীরের ইমিউনিটি ঠিক রাখে।জামে উপস্থিত পটাশিয়াম হার্ট ভালো রাখে এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়ক।অর্থাৎ,আমাদের শরীরের জন্য একটা উপকারী ফল।জাম খাওয়ার উপকারীতা
জামে ক্যালোরির মাত্রা কম,তবে ভিটামিন এবং মিনারেলের পরিমাণ অনেক বেশি থাকে।জাম আমদের শরীরের জন্য খুব উপকারী একটা ফল।তাই চলুন আর বেশি কথা না বলে জেনে নিই,জাম আমাদের শরীরের জন্য কতটা উকারী।- জাম খাওয়ার ফলে হিমোগ্লোবিনপর মাত্রা বাড়তে পারে।এতে রয়েছে ভিটামিন-সি এবং আয়রন।আয়রনের ঘাটতে কমাবে এবং রক্ত পরিশুদ্ধ করবে।
- দাতের সমস্যা থাকলে জাম পাতা ব্যবহার করতে পারেন।এটি আপনার দাঁতের মাড়ি থেকে রক্ত পড়া বন্ধ করবে এবং দাঁত মজবুত করে তুলবে।
- জাম ত্বকের সমস্যা দূর করে,ত্বক করে তোলে সুন্দর এবং নরম।এছাড়াও,জাম চোখের জন্য বেশ উপকারী।
- জাম ডায়াবেটিস রোগীর জন্য খুবই উপকারী ফল।এটি শরীরের ইনসুলিনের মাত্রা বাড়িয়ে দেয় এবং শর্করা পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করে।
- জাম খেলে শরীরের ওজন কমে।জামে ফাইবার বেশি থাকে এবং ক্যালোরির মাত্রা কম থাকে। তাই জাম ওজন কমাতে সহায়ক।
- হাপানি,ফ্লু এধরণের রোগের জন্য জাম অনেকটা কার্যকর।আপনার এ সমস্যা থাকলে জাম খেতে পারেন।
জাম খাওয়ার অপকারীতা
জাম খাওয়ার অপকারীতা নেই বললেই চলে।তবে সব জিনিসের ভালো গুণ থাকলে কিছু খারাপ গুণও থাকে।তাই চলুন জাম খাওয়ার অপকার সম্পর্কে বিস্তারিত জানি।- যাদের শরীরে এলার্জি আছে।জামের বিচি খেলে তাদের এলার্জি সমস্যা হতে পারে।যদি এলার্জি সমস্যা হয় তাহলে এটি এড়িয়ে চলা উত্তম।
- এছাড়াও,জাম বেশি খেলে পেটের সমস্যা হতে পারে।পেট ব্যাথা করতে পারে অথবা পাতলা পায়খানা হতে পারে।তাই খাওয়ার সময় কোনো কিছু মাত্রা অতিরিক্ত খাওয়া উচিত না।
জামের বীজ গুড়া বা চূর্ণ করে খাওয়ার নিয়ম
আমরা বাজার থেকে অনেই জামের বীজের গুড়া বা চূর্ণ কিনে আনি।কিন্তু আমরা সেটা জানি না,আসল নাকি নকল।তাই খেতে গেলে অনেক সময় অসস্থিকর মনে করি।এজন্য সবাই বাড়িতে জামের বীজ গুড়া বা চূর্ণ তৈরি করে নিতে চায়।যেহেতু গ্রামে জাম গাছ অনেক পাওয়া যায় তাই জামের বীজ পেতে কোনোরকম কষ্ট করতে হয় না।চলুন জেনে নিই জামের বীজ চূর্ণ করা টেকনিক।
- প্রথমে জামের কালো অংশ ছাড়িয়ে নিয়ে বীজ আলাদা করতে হবে।
- বীজ আলাদা করা হলে ভালোভাবে জামের বীজ ধুয়ে পরিষ্কার করে নিতে হবে এবং ৪-৫ দিন ভালোভাবে রোদে শুকিয়ে নিতে হবে।
- এখন শুকনা বীজ থেকে উপরের শক্ত আবারণ ছড়িয়ে নিয়ে নীল অংশ রেখে দিতে হবে।পুনরায় ৩-৪ দিন রোদে শুকিয়ে নিতে হবে।
- রোদে ভালোভাবে শুকানোর পরে করণীয়, একটা ব্লেন্ডারে শুকনা বীজগুলো নিয়ে গুড়া বা চূর্ণ তৈরি করা।
জাম পাতার উপকারিতা
জাম ফলে শুধুমাত্র গুণাগুণ আছে এমন না।জামের পাতাও অনেক কার্যকর। চলুন দেখে নিই জাম পাতার উপকারিতাঃ- জামের কচি পাতা রস করে,সাথে একটু ছাগলের দুধ মিশিয়ে পান করতে পারেন।যা রক্ত আমাশয় রোগ ভালো করবে।
- বমি বমি ভাব দূর করতে জাম পাতার রস অনেক উপকারী।
- জাম পাতা শুকিয়ে গুড়া করে খেতে পারেন ফলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে পারে এবং ওজন কমাতে সহায়ক।
- জাম পাতার রস খেলে চুলা পড়া বন্ধ হতে পারে।অনেকের অল্প বয়সে চুল পড়ে যায়।সেক্ষেত্রে এই রস খেতে পারেন।
- জাম পাতা সিদ্ধ করে রস বের করে নিয়ে। সে রসের সঙ্গে মধু মিশিয়ে পান করুন ফলে বমি ভাব দূর হবে।
- রক্তপাত বন্ধ করতে জামের কচি পাতা সহায়ক।অনেক সময় হাত পা কেটে গেলে রক্ত বন্ধ হতে চায় না ফলে জামের কচি পাতা ধুয়ে পরিষ্কার করে রস চিপে কাটা জায়গায় দিতে পারেন।ফলে রক্তপাত বন্ধ হবে।
জাম গাছের ছালের উপকারিতাঃ-
জাম গাছের ছালের অনেক উপকারীতা রয়েছে সেগুলো নিম্নে তুলে ধরা হলোঃ-- জামে গাছের ছাল পানি দিয়ে সেদ্ধ করে সেই পানি ঠান্ডা করে অর্থাৎ, হালকা গরম অবস্থায় গড় গড় কুলি করলে দাঁতের সমস্যা দূর করতে সাহায্যে করবে।যেমনঃ দাঁত ফোলা,দাঁতের গোড়া দিয়ে রক্ত পড়া ইত্যাদি।
- বাচ্চাদের পেটের ব্যাথা সমস্যা দূর করতে সাহায্য করবে।জাম গাছের ছাল গুড়া করে সাথে একটু গাওয়া ঘি এবং চিনি মিশ্রণ করে খাওয়ান।
জাম যেসব সমস্যা প্রতিরোধ করতে পারে
জাম আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী। এটি আমাদের শরীরের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে।যেমন: রক্তের হিমোগ্লোবিনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে,রক্ত পরিষ্কার করে, দেহের অক্সিজেন সরবারাহের জন্য অনেক কার্যকর। অক্সিজেন সরবারাহের মাধ্যমে শরীরের যাবতীয় কার্যক্রম ঠিক রাখে।দাতের মাড়ির সমস্যা দূর করে।হার্টের রোগ ভালো করে এছাড়াও চোখের সাস্থোর জন্য ভালো।লেখকের শেষ মন্তব্য
আমরা আজকের এই আর্টিকেলের মধ্যে জাম কেন খাবেন? জাম আপনার শরীরের জন্য কতটা উপকারিতা,অপকারীতা এবং জামের বীজ গুড়া বা চূর্ণ করে খাওয়ার নিয়ম এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা করে। আশা করি পোস্ট টি আপনার ভালো লেগেছে।এতক্ষণ সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।প্রতিনিয়ত এমন সব তথ্য পেতে নিয়মিত আমাদের সাইট ভিজিট করুন।
রিফাত আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url