আপেল সিডার ভিনেগার: খাওয়ার নিয়ম, উপকারিতা ও স্বাস্থ্য সচেতনতায় ব্যবহার
আমাশয় রোগীর খাদ্য তালিকা ও করণীয়আপেল সিডার ভিনেগার অনেকই খায়।এটি অনেকেই রান্নার সময় ব্যবহার করে থাকে।কিন্তু আমাদের আগে জানতে হবে আপেল সিডার ভিনেগার কেন খাবো? আমাদের শরীরের জন্য উপকারী নাকি ক্ষতিকর।
আপেল সিডার ভিনেগার অনেক উপকারী। এটা বহুকাল আগে থেকেই মানুষ ব্যবহার করে আসছে।তবে বর্তমান বিজ্ঞান কি বলছে চলুন জেনে নিই।
পোস্ট সূচিপত্রঃ- আপেল সিডার ভিনেগার: খাওয়ার নিয়ম, উপকারিতা ও স্বাস্থ্য সচেতনতায় ব্যবহার
আপেল সিডার ভিনেগার: খাওয়ার নিয়ম, উপকারিতা ও স্বাস্থ্য সচেতনতায় ব্যবহার
বহুকাল আগে থেকে মানুষ আপেলের সিডার ভিনেগার ব্যবহার করছে।এটি সাস্থ্যোর জন্য উপকারী।ভিনেগার খাওয়ার সময় কিছু সর্তকতা অবলম্বন করা উচিত।ভিনেগার কখনো শুধো খাওয়া যাবে না,সাথে পানি মিশিয়ে পান করতে হবে।আপেল সিডার ভিনেগার কেন খাবেন? এবং নিয়ম
আপেল সিডার ভিনেগার খেলে এর উপকারীতা আছে।এটি আপনার শরীরের ওজন কমাতে সাহায্য করবে,রক্তের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে,ভিনেগার ক্যান্সার কোষ নষ্ট করে এবং টিউমার রোগ সারিয়ে তোলে।ভিনেগার খেলে গলা জ্বলা ভাব হতে পারে।তাই যদি প্রথম খান তাহলে কম করে খাবেন।বেশি খেলে খাবারের হজমে সমস্যা হতে পারে দাঁতের এনামেল ক্ষয় হয়ে সমস্যা হতে পারে।আর,ডায়াবেটিস রুগীর ক্ষেত্রে না খাওয়া ভালো কারণ: ডায়বেটিস রোগের ওষুধের সাথে ভিনেগার খেলে হিতে বিপরীত হতে পারে।এজন্য কোনো কিছু খাওয়ার আগে ভালোভাবে জেনে শুনে খাওয়া উচিত।
আপেল সিডার ভিনেগার খাওয়ার উপকারিতা
আপেল সিডার ভিনেগার খেলে আমরা কি কি উপকার পাবো চলুন জেনে নিই-- আপেল সিডার ভিনেগারে রয়েছে অ্যাসিটিক এসিড,এন্টিঅক্সিডেন্ট এবং খনিজ লবণ যা শরীরের জন্য উপকারী।
- ব্যাক্টেরিয়া দূর করতে আপেল সিডার ভিনেগার ব্যবহার করা হয়।খাবার সংরক্ষণ করতে ভিনেগার ব্যবহার করা হয় ফলে খাবার ভালো থাকে।এছাড়াও ক্ষত স্থানে এবং শরীরের ভিনেগার ব্যবহার করতে পারেন ফলে ত্বকের ব্যাক্টেরিয়া নিরাময় হবে।এক্ষেত্রে,ত্বকে ভিনেগার ব্যবহার করলে পরিমাণ মতো পানি মিশ্রণ করে নিতে হবে,অন্যথায় ত্বকের ক্ষতি হতে পারে।
- আপেল সিডার ভিনেগার শরীরের চর্বি কমিয়ে ওজন কমাতে সাহায্য করে।তবে,শুধুমাত্র ভিনেগার খেলে হবে না সাথে খাওয়া দাওয়া নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
- আপেল সিডার ভিনেগার রক্তের কোলেস্টরল নিয়ন্ত্রণ করে এবং হৃদ রোগের ঝুকি কমায়।
- অনেক সময় গলায় ব্যাথা এবং হেঁচকি শুরু হয় তখন আপনি একটু কুসুম গরম পানির সাথে মধু এবং আপেল সিডার ভিনেগার মিশ্রিত করে খেয়ে নিন।ফলে আপনার গলায় ব্যাথা এবং হেঁচকি-কে বলুন (বাই..বাই..টা..টা)।
- আপেল সিডার ভিনেগার ক্যান্সার কোষ নষ্ট করতে সাহায্যে করতে পারে।তবে,এটা নিয়ে এখনো বিজ্ঞানিরা গবেষণা চালাচ্ছেন।
- ঠান্ডা লাগলে নাক বন্ধ হয়ে যায় তখন ভিনেগার ইউজ করতে পারেন।
আপেল সিডার ভিনেগার উইথ মাদার রেসিপি
আপেল সিডার ভিনেগার এবং মাদার রেসিপি বানানোর জন্য প্রথমে কিছু জিনিসের প্রয়োজন।তাই চলুন আগে জেনে নিই কোন জিনিসগুলো লাগবে।- আাপেল, লাল চিনি,কাচের জার,কাঠের চামচ এবং পানি।
- প্রথমে ফলটি ভালোভাবে ধুয়ে নিন যাতে ফলটি ফরমালিন মুক্ত হয়।
- ফলটি কেটে ভাগ করে নিবেন এবং একটি কাচের জারে আপেলগুলো নিবেন তারপর পানি দিয়ে কাঠের চামচ দিয়ে নেড়ে নিতে হবে।
- এখন জারের মুখ একটা পাতলা কাপড় দিয়ে বেধে নিতে হবে।পাতলা কাপড় ব্যবহার করতে হবে কারণ: জারের ভিতর যাতে হালকা বাতাস প্রবেশ করতে পারে।মুখ কাপড় দিয়ে বাধা হলে জারটি একটু কম আলো আছে এমন জায়গায় রেখে দিন।তবে বদ্ধ কোনো জায়গায় রাখবেন না।কম আলোপূর্ণ একটি জায়গায় রাখুন এবং বাতাস ঢুকতে পারে এমন জায়গায় রাখুন।
- প্রতিদিন জারের ঢাকনা খুলে কাঠের চামচ দিয়ে নাড়াচাড়া করে দিবেন এবং ১৫ দিন পরে সামান্য পরিমাণ লাল চিনি মিশ্রণ করে দিবেন।
- এভাবে পুরা ৪৫ দিন কাঠের চামচ দিয়ে নাড়াচাড়া করবেন।৪৫ দিন পরে জারটি খুলে ভালোভাবে ছেকে নিবেন।তবে ছেকে নেওয়ার পরে অবশ্যই কাচের পাত্রে রাখবেন।
- ছেকে নেওয়ার পরে পুনরায় ১৫ দিন জারে রেখে দিবেন। ফলে দেখবেন পাত্রের নিচে ব্যাক্টেরিয়া জমবে।তখন সেটি ভিনেগার উইথ মাদার।
বি:দ্রঃ পুরো প্রয়িকা সম্পূর্ণ ভালোভাবে করবেন।এবং এই প্রক্রিয়ায় কোনো প্রকার ধাতব পাত্র ব্যবহার করা যাবে না।
আপেলের পিউরি রেসিপি
ছোট বাচ্চাদের জন্য আপেলের পিউরি রেসিপি অনেক ভালো।তাই চলুন জেনে নিই কিভাবে আপেলের পিউরি তৈরি করবেন।আপেলের পিউরি তৈরি করার জন্য প্রথমে আপেল নিবেন এবং আপেলের খোসা ছড়িয়ে নিবেন।আপেলের খোসা ছড়িয়ে নেওয়ার পরে আপেলগুলো কেটে ভাগ করে নিবেন।
আাপল কাটার পরে হাফ কাপ পানি দিয়ে আপেল গুলো সেদ্ধ করে নিন।এখন করণীয় সেদ্ধ আপেল ব্লেন্ড করে নেওয়া এবং অথবা হাত দিয়ে চটকিয়ে নেওয়া।যদি দেখেন পিউরিটি ঘন হয়ে গিছে তাহলে সামান্য পরিমাণ দুধ মিশ্রণ করে নিতে পারেন।এখন সম্পূর্ণ রূপে আপনার আপেলের পিউরি তৈরি।(ট্যানট্যানান🥰)
আপেল খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
অনেকেই শুনেছেন আপেল খাওয়া আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী।আপেল খেলে শরীরের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে।তাই আগে নিজে জানুন আপেলের রহস্য। আপেল খাওয়া আপনার শরীরের জন্য উপকারী বাকি অপকারী।তাই চলুন জেনে নিই।আপনার যদি অ্যাসিডিটির সমস্যা থাকে তাহলে কখনোই খালি পেটে আপেল খাবেন না।খালি পেটে আপেল খেলে আপনার পেটে অ্যাসিডের মাত্রা বেড়ে যেতে পারে এবং পেট ব্যাথা করতে পারে।অ্যাসিডিটি থাকলে আগে অন্যকিছু খাবেন তারপর আপেল খান।আপেলের উপকারীতা জানুন।
আপেল খাওয়ার উপকারীতা
আপেলে থাকা বিভিন্ন খনিজ উপাদান সাস্থ্যো ঠিক রাখতে সাহায্য করে।শরীরে ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্যে করে।রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।যেমনঃ হৃদ রোগ,হাঁপানি,ক্যান্সার কোষ ধ্বংস,ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে,অন্ত্রের সমস্যা দূর করে,দাঁত সমস্যা দূর করে- দাঁতে বিভিন্ন ধরণের সমস্যা হতে পারে।যেমন: মাড়ি দিয়ে রক্ত পড়া, দাঁতে লালছে ভাব ইত্যাদি দূর করে।এছাড়াও, এলার্জি রোগের সুরক্ষা দেয়।অনেক খাবারে এলার্জি থাকে।যেগুলো এলার্জি রোগীর জন্য খাওয়া ক্ষতিকর।তাই খাবার খাওয়ার সময় দেখেশুনে খাওয়া উচিত।আপেল খাওয়ার অপকারীতা
আপেল খাওয়ার উপকার বেশি অপকারীতা নেই বললেই চলে।আাপল তবে যে কোনো জিনিস মাত্রা অতিরিক্ত খাওয়া উচিত না।পরিমাণমতো খেতে হবে তাহলে উপকার পাবেন।বেশি আপেল খেলে পেটের সমস্যা হতে পারে এছাড়াও আপেলে যেহেতু এসিড থাকে।যা দাঁতের ক্ষতি করতে পারে।তাই আপেল খাওয়ার পরে দাত পরিষ্কার করা উচিত।আপেল প্রতিদিন একটা করে সকলাবেলা খেতে পারেন।আপনি যে কোনোভাবে আপেল খেতে পারেন।যেমন : কাঁচা,সালাত বানিয়ে এছাড়াও, আপেলের পিউরি তেরি করে।এভাবে যদি খেয়ে দেখো,আশা করি আপনার মন ভরে যাবে।একটি আপেলে কত ক্যালরি থাকে
একটি আপেলে কেমন ক্যালোরি থাকবে এটা বলা যায় না।আপেলের আকারের উপর ভিত্তি করে ক্যালোরির পরিমাণ কম বা বেশি হতে পারে।যদি একটি মাঝারি সাইজের আপেল নিই তাহলে ১০০ গ্রাম ক্যালোরি থাকতে পারে।আপেলের সাইজ বড় হলে ক্যালোরির পরিমাণ একটু বেশি হবে।আাপেলের মধ্যে ক্যালোরি মূলত কার্বোহাইড্রেট থেকে আসে।যা ফলের মধ্যে প্রাকৃতিক ভাবে থাকে।এছাড়াও আপেলে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে। তবে অন্যান্য ফল থেকে আপেলের মধ্য ক্যালরির পরিমাণ একটু কম।তাই এটি সুষম খাদ্যোর আওতায় রাখতে পারেন।সবুজ আপেলের উপকারিতা
সবুজ আপেল লিভার ও খাদ্য পাক নালির যে কোনো সমস্যা থেকে মুক্তি দেয়। ডায়রিয়ার সমস্যা রোধ করে এছাড়াও, কোষ্ঠকাঠিন্য, বাতের সমস্যা এবং বদ হজম দূর করে।বিশেষ করে সবুজ আপেল আমাদের শরীরের শক্তি যোগায়।এতে থাকে কার্বোহাইড্রেট এবং শর্করা। যারা কঠোর পরিশ্রম করেন তারা দৈনিক খাদ্য তালিকায় আপেল রাখতে পারেন।লেখকের শেষ মন্তব্য
আজকের এই আর্টিকেলের মধ্যে আপেল সিডার ভিনেগার খাবার নিয়ম-কেন খাবেন?,আপেল সিডার ভিনেগার খাওয়ার উপকারিতা,আপেল সিডার ভিনেগার উইথ মাদার রেসিপি,আপেলের পিউরি রেসিপি এ সকল বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছি আশা করি পেস্ট টি পড়ার মাধ্যমে আপনার মূল্যবান প্রশ্নের যথাযথ উত্তর পেয়েছেন।এতক্ষণ সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।আমাদের লেখা যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে আমাদের সাইটে নিয়মিত ভিজিট করুন।
রিফাত আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url