নিম পাতার যেসব জাদুকরী গুণঃ ত্বক, চুল ও স্বাস্থ্যে অবিশ্বাস্য উপকারিতা

জাম কেন খাবেন?এবং উপকারিতানিম আমাদের দেশে বহুকাল আগে থেকেই ওষুধিগুণ সমৃদ্ধ একটি উদ্ভিদ হিসেবে পরিচিত।এটি ত্বকের সাস্থ্যোর জন্য একটি জাদুকরী গাছ।এ গাছের প্রতিটি শাখা প্রশাখায় রয়েছে ওষুধিগুণ।আয়ুর্বেদিক শাস্ত্রে নিম পাতাকে জাদুকরী পাতা হিসেবে আখ্যা দেওয়া হয়।

নিম পাতার যেসব জাদুকরী গুণঃ ত্বক, চুল ও স্বাস্থ্যে অবিশ্বাস্য উপকারিতা

নিম আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী। তাই আমরা আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যোমে নিম পাতার যেসব জাদুকরী গুণ: ত্বক, চুল ও স্বাস্থ্যে জন্য উপকারিতা নিয়ে আলোচনা করবো।জানতে হলে আমাদের সাথে থাকুন।

পোস্টের সূচিপত্রঃ- নিম পাতার যেসব জাদুকরী গুণ: ত্বক, চুল ও স্বাস্থ্যে অবিশ্বাস্য উপকারিতা

নিম পাতার যেসব জাদুকরী গুণ: ত্বক, চুল ও স্বাস্থ্যে অবিশ্বাস্য উপকারিতা

সাস্থ্যোর জন্য নিম পাতার বিভিন্ন উপকার রয়েছে।চুল,ব্রণ,দাত,চোখের চুলকানি ইত্যাদি সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারি।নিম্নে নিমের ব্যবহার বিধি দেওয়া হলোঃ

  • চুলের যত্নে নিমঃ-
চুলের জন্য নিম কার্যকর কারণ: প্রতিদিন নিম পাতা ভিজিয়ে পানি দিয়ে মাথা ধুলে,আপনার মাথার চুল পড়ার সমস্যা দূর হবে,মাথার উকুনের সমস্যা দূর হবে এবং নিমের অ্যান্টিব্যাক্টেরিয়ার এবং অ্যান্টি ফাংগাল মাথার স্ক্যাল্পের সমস্যা দূর করে।এছাড়াও ত্বকের ব্যাক্টেরিয়া নিরমূল করে,ব্রণের সমস্যা দূর করে।
  • দাঁতের সমস্যা দূরঃ-
নিমের ডাল দিয়ে বানানো মিসওয়াক দিয়ে দাঁত ব্রাশ করলে দাঁত পরিষ্কার হয়,দাঁতের ক্ষয় রোধ হয় এবং দাঁতের মাড়ির সমস্যা নিরাময় হয়।
  • চোখের চুলকানি দূরঃ-
কখনো কখনো আমাদের চোখ জ্বালাপুড়া করে,চুলকায়।তখন নিম পাতার পানি দিয়ে জ্বালিয়ে সে পানি ঠান্ডা করবেন। তারপর তুলা দিয়ে চুখে ব্যবহার করতে পারেন ফলে আরাম পাবেন।এছাড়াও চোখের লালছে ভাব কাটাতে সহায়তা করে।

নিম পাতা দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায়

নিম পাতা দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায়

আপনি যদি আপনার ত্বক ফর্সা করতে চান তাহলে নিম পাতা ব্যবহার করতে পারেন।নিম পাতায় রয়েছে সব ভেষজ ঔষুধি গুণ।ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে নিম খুব কার্যকর। নিম পাতা ব্যবহার করলে আপনার শরীরের কোনো প্রকার ক্ষতি হয়ে না।তাই নির্ভয়ে আপনার শরীরের নিম পাতা ব্যবহার করতে পারেন।
নিম পাতা ব্যবহার করতে হলে আপনাকে নিমের সাথে কিছু মিশিয়ে নিতে হবে।আপনি চাইলে কাচা হলুদ বাটা বা টক দই মেশাতে পারেন।এটা আপনি সপ্তাহে (২-৩) দিন ব্যবহার করবেন।তবে এই ভেষজটি ত্বকে লাগিয়ে ধুয়ে ফেলবেন না,শুকিয়ে যাওয়ার পরে ভালো ঠান্ডা পানি অথবা ফেসওয়াস দিয়ে ধুয়ে ফেলবেন।এভাবে ১ মাস পর্যন্ত ব্যহার করবেন।দেখবেন আস্তে আস্তে আপনার ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।

এটি একদম ন্যাচারাল উপাদান দিয়ে তৈরি তাই আপনার শরীরের কোনো প্রকার ক্ষতি হবে না।যাদের মুখে অনেক ব্রণের সমস্যা তারা এটা ব্যবহারে এড়িয়ে চলার চেষ্টা করবেন।নয়তো আপনার ব্রণ আরও বেড়ে যেতে পারে।

ব্রণের জন্য নিম পাতার ব্যবহার

ব্রণের জন্য নিম পাতা ব্যবহার করতে পারেন তবে এটি ব্যবহারের ক্ষেত্রে কিছু নিয়ম মানতে হবে।আর নিমপাতা যেহেতু একটি প্রাকৃতিক উপাদান তাই এর ফলাফল পেতে একটু দেরি হলেও আপনি যে ফলাফল পাবেন সেটি 100% ভালো হবে।আপনার রোগ একদম নির্মূল করে দিবে।
ব্রণের জন্য ব্যবহার করতে হলে শুধু নিম পাতা বেটে পেস্ট তৈরি করে নিবেন।তারপর আপনার মুখের যে জায়গায় ব্রণ সেখানে আলতো করে লাগিয়ে নিবেন।ভুলেও সম্পূর্ণ মুখে ব্যবহার করবেন না। কারণ: সবার ত্বকের ধরন এক রকম নয়।তাই যেখানে যেখানে ব্রণ সেখানে ব্যবহার করুন।এটি সপ্তাহে (২-৩) দিন ব্যবহার করুন।এভাবে ১ মাস পর্যন্ত ব্যবহার করুন আশা করি ভালো ফলাফল পাবেন।

এলার্জিতে নিম পাতার ব্যবহার

এলার্জি সমস্যার জন্য নিম পাতা ব্যবহার করতে পারেন এটা আপনার শরীরের এলার্জি সমস্যা দূর করবে।নিম পাতায় রয়েছে শক্তিশালী এন্টি-এলার্জিক বৈশিষ্ট্য।যা আপনার এলার্জি হওয়ার প্রকিয়ায় বাধা দেয়।তাই নিম পাতা সঠিক ভাবে ব্যবহার করলে আপনার এলার্জি থেকে মুক্তি মিলতে পারে।নিম্ন ব্যবহার তুলে ধরা হলো:
আপনি নিম পাতা গুড়া অথবা বড়ি তৈরি করে খেতে পারেন।এছাড়াও পেস্ট তৈরি করে এলার্জির জায়গায় লাগাতে পারেন।এলার্জি থেকে মুক্তি পেতে হলে সকালে খালি পেটে পানির সাথে নিম পাতার গুড়া মিশিয়ে খেতে পারেন অথবা বড়ি খেতে পারেন।তবে নিম পাতা গুড়া খাওয়া ক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ নিন এবং সর্তকতা অবলম্বন করুন।অতিরিক্ত মাত্রায় নিম পাতার গুড়া খেলে শরীরের ক্ষতি হতে পারে।

চর্মরােগে নিম পাতার ব্যবহার

শরীরে প্রচুর ঘাম হওয়ার ফলে শরীরের যে জায়গা ঢাকা থাকে সেখানে অনেক সময় চর্ম রোগ হয়।যেমন: দাদ,চুলকানি ইত্যাদি।তবে এ সমস্যা গুলো এত সহজে ঠিক হয় না।এ রোগ থেকে মুক্তি পেতে হলে কিছু না কিছু ব্যবহার করতে হয়।যেমন ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ গ্রহণ।আপনি চাইলে আবার চর্ম রোগ থেকে মুক্তি পেতে ঘরোয়া পদ্ধতি অবলম্বন করতে পারেন।অর্থাৎ, নিম পাতা দিয়ে আপনার রোগ সারিয়ে তুলতে পারবেন। তাই চলুন চর্মরোগে নিম পাতার গুণাগুণ জেনে নিই।
  • নিম পাতা যেহেতু ব্যাক্টেরিয়া বিরোধী তাই শরীরে যে জায়গায় সমস্যা সেখানে নিম পাতা থেতো করে নিয়ে লাগিয়ে নিন।
  • নিম পাতা এবং পানি দিয়ে জ্বালিয়ে নিয়ে এটি গোসলের সময় ব্যবহার করতে পারেন।যাদের চুলকানি আছে তারা ব্যবহারে ভালো আরাম পাবেন।
  • যেখানে সমস্যা সেখানে নিম পাতা এবং কাচা হলুদ বাটা ব্যবহার করুন।
বি:দ্রঃ- আপনার শরীরের যে কোনো সমস্যায় প্রাকৃতিক উপায়গুলো ব্যবহার করার আগে,ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

নিম পাতার ক্ষতিকর দিক

নিম পাতার ক্ষতিকর দিক

নিম পাতা
অনেক রোগের প্রাকৃতিক সমাধান হলেও এর অতিরিক্ত ব্যবহারে সৃষ্টি হতে পারে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া।এটি অতিরিক্ত ব্যবহারে পাকস্থলীর সমস্যা হতে পারে।এছাড়াও আরও কিছু ক্ষতিকর দিক নিম্নে তুলে ধরা হলোঃ-
  • গর্ভবতী নারীর জন্য ক্ষতিকরঃ-
গর্ভাবস্থায় নিম পাতা ব্যবহার নারীর জন্য ক্ষতিকর।এটি নারীর গর্ভপাতের কারণ হতে পারে।তাই নারীর নিম পাতার ব্যবহার থেকে বিরত থাকা উচিত।
  • শিশুর জন্য ক্ষতিকরঃ-
নিম পাতায় যেসমস্ত সক্রিয় যৌগ রয়েছে সেগুলো শিশুর ক্ষতি করতে পারে।শিশুর লিভারের সমস্যা দেখা দিতে পারে।বিশেষ করে ৫ বছর কম বয়সী শিশুদের ক্ষেত্রে এটা একদম এড়িয়ে চলা উচিত।
  • লিভারের ক্ষতি করেঃ-
নিম পাতার অধিক পরিমাণে ব্যবহারের ফলে লিভারের ক্ষতি হতে পারে। তবে এটি দীর্ঘ মেয়াদি ক্ষতি হতে পারে।তাই বেশি নিম পাতা ব্যবহার না করা উচিত।
  • এলার্জি সমস্যাঃ-
কিছু মানুষের ক্ষেত্রে নিম পাতা ব্যবহারে এলার্জি হতে পারে।তাই শরীরে কোনো এক জায়গায় লাগিয়ে পরিক্ষা করে নিন।যদি কোনো সমস্যা হয় তাহলে এটি ব্যবহারে বিরত থাকুন।

লেখকের শেষ মন্তব্য

নিম পাতায় যেমন উপকার রয়েছে ঠিক তেমনই রয়েছে এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া।আর যদি আগে থেকে শরীরে কোনো রোগ থাকে তাহলে যোকো কিছু ব্যবহারের আগে ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করুন তারপর সেটি ব্যবহার করুন।আমরা আজকের আর্টিকেলের মধ্যে নিম পাতার যেসব জাদুকরী গুণ: ত্বক, চুল ও স্বাস্থ্যে অবিশ্বাস্য উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আশা করি,আপনার আর্টিকেল টি ভালো লেগেছে।
আর্টিকেল টি যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে পোস্টটি সোসাল মিডিযায় পরিচিত দের কাছে সেয়ার করুন যাতে তারাও উপকৃত হতে পারে।আর এমন সব পোস্ট পড়তে নিয়মিত আমাদের সাইট ফলো করুন।এতক্ষণ সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

রিফাত আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url