বিকাশ এজেন্ট ব্যবসা করার নিয়ম- সম্পূর্ণ গাইড

বিকাশ একাউন্ট ব্লক হওয়ার কারণ ও খোলার উপায়বিকাশ এজেন্ট ব্যবসা করার নিয়ম-সম্পূর্ণ গাইড লাইন পাবেন আজকের এই আর্টিকেলে।অনেকেই বিকাশ এজেন্ট ব্যবসা করতে চান,কিন্তু কিভাবে এই ব্যবসা শুরু করবেন সেটা বুঝতে পারেন তাই আজকের আর্টিকেল থেকে এজেন্ট ব্যবসা করার সম্পূর্ণ গাইড লাইন পাবেন।

বিকাশ এজেন্ট ব্যবসা করার নিয়ম- সম্পূর্ণ গাইড
বিকাশ এজেন্ট ব্যবসা করার নিয়ম জানার পাশাপাশি বিকাশ ব্যবসা করার আরও বিভিন্ন উপায় জানতে পারবেন।আশা করি আজকের আর্টিকেল টি আপনার বিকাশ এজেন্ট ব্যবসা করার যাত্রায় সফল হতে সাহায্য করবে।এজেন্ট ব্যবসার সম্পূর্ণ গাইড লাইন পেতে চাইলে সম্পূর্ণ আর্টিকেল টি পড়ুন।

সূচিপত্রঃ বিকাশ এজেন্ট ব্যবসা করার নিয়ম- সম্পূর্ণ গাইড

বিকাশ এজেন্ট ব্যবসা করার নিয়ম- সম্পূর্ণ গাইড

আপনি যদি একজন বিকাশ এজেন্ট ব্যবসায়ী হতে চান তাহলে সর্ব প্রথম বিকাশ এজেন্ট ব্যবসা করার নিয়ম জানতে হবে।আপনি যদি সঠিক নিয়ম না জেনে বিকাশ এজেন্ট ব্যবসার কাজ করতে যান তাহলে ব্যবসায় লস হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।

তাই আজকের আর্টিকেলের মূল আলোচ্য বিষয় বিকাশ এজেন্ট ব্যবসা করার নিয়ম বিস্তারিত জানার পরে আশা করি আপনি এজেন্ট ব্যবসা শুরু করে দিতে পারবেন।তাই চলুন আর কথা না বাড়ি মূল আলোচনায় যাওয়া যাক।
  • এজেন্ট ব্যবসা করার জন্য সর্বপ্রথম আপনার একটা বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খুলতে হবে।
  • বিকাশ   এজেন্ট   ব্যবসা   করার   জন্য  প্রতিদিন আপনার  এজেন্ট  একাউন্ট  থেকে  কমপক্ষে ২ হাজার  টাকা  লেনদেন  থাকতে  হবে।
  • বিকাশ  এজেন্ট  ব্যবসা  করার  জন্য  আপনার এজেন্ট  একাউন্টে  সর্বনিম্ন  ৭  হাজার  টাকা  থাকতে  হবে।
  • বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খোলার পর আপনার বিকাশ এজেন্ট একাউন্টে প্রথমবার সর্বনিম্ন ১ লক্ষ টাকা লোড করতে হবে।
  • এজেন্ট ব্যবসা করার জন্য আপনাকে প্রতিমাসে ৫ টা পারসোনাল বিকাশ একাউন্ট খুলে দিতে হবে।এটা বাধ্যবাধকতা নয়।

বিকাশ এজেন্ট হতে কি কি প্রয়োজন

বিকাশ এজেন্ট হলো এমন এক ধরণের এজেন্ট একাউন্ট,যার মাধ্যমে সারা দেশের বিকাশ গ্রাহক কে ক্যাশ আউট,ক্যাশ পে, বিল পে মতো আর্থিক সেবা প্রদান করা য়ায়।বিকাশ কোম্পানির সাথে একজন পার্টনার হিসেবে বিকাশ এজেন্ট ব্যবসা পরিচালনা করতে পারেন।

এখন আমরা বিকাশ এজেন্ট ব্যবসা করার জন্য কি কি প্রয়োজন সেগুলো জানবো।কারণ: এজেন্ট একাউন্ট খোলার জন্য আপনার যদি প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস গুলো না থাকে তাহলে বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খুলতে পারবেন না। তাই নিম্নে  বিকাশ  এজেন্ট  হতে  যা  যা  প্রয়োজন  তুলে  ধরা  হলোঃ-

  • আপনার জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি অথবা জন্মনিবন্ধন, ড্রাইভিং লাইসেন্স,পাসপোর্ট ইত্যাদি। এগুলোর মধ্যে যে কোনো একটির ফটোকপি।
  • আপনার সিম কার্ড এবং সত্যায়িত ছবি।
  • আপনার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ট্রেড লাইসেন্স থাকতে হবে।
  • এজেন্ট ব্যবসায়ী হওয়ার জন্য টিন সার্টিফিকেট থাকতে হবে।
  • বিকাশ এজেন্ট একাউন্টে আবেদন কারীর ৩ কপি ছবি।
  • একদম ফ্রেশ মোবাইল নাম্বার দিয়ে বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খুলতে হবে।আগে যদি ঐ নাম্বারে বিকাশ একাউন্ট খোলা থাকে তাহলে সেটা দিয়ে হবে না।নতুন যে নাম্বারে বিকাশ খোলা নাই এমন নাম্বার দিয়ে খুলতে হবে।
  • আপনার যদি সকল ডকুমেন্টস থাকে তাহলে বিকাশ এজেন্ট  একাউন্ট  খুলতে  সর্ব প্রথম  বিকাশ  এজেন্ট ফরম  পূরণ  করতে  হবে।এটি চাইলে অনলাইনে পূরণ করতে পারবেন।

বিকাশ এজেন্ট কমিশন কত টাকা

বর্তমান সময়ে অনলাইন মোবাইল ব্যাংকিংয়ে সব চেয়ে জনপ্রিয় মাধ্যম বিকাশ।অনেকেই বিকাশ এজেন্ট ব্যবসা করতে চাচ্ছেন তাই তাদের মনে অনেক সময় একটা প্রশ্ন নাড়াচাড়া করে বিকাশ এজেন্ট কমিশন কত টাকা? এই প্রশ্ন টা থাকা স্বাভাবিক।তাই চলুন বিকাশ এজেন্ট কমিশন জেনে নিই।

বিকাশ কোম্পানি সাধারণত দুই ধরনের উপায়ে বিকাশ এজেন্ট কমিশন প্রদান করে।নিম্নে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হলোঃ

  1. কোডের মাধ্যমে বিকাশে টাকা লেনদেন
  2. বিকাশ এজেন্ট অ্যাপের মাধ্যমে টাকা লেনদেন করলে

কোডের মাধ্যমে বিকাশে টাকা লেনদেন

আপনি  যদি  বিকাশ  কোডের  মাধ্যমে  টাকা  লেনদেন  করেন তাহলে  কেমন  কমিশন  পাবেন তা তুলে ধরা হলোঃ বিকাশে ব্যালেন্স চেক অথবা টাকা লেনদেন,যে কোনো বিকাশের কাজ করার জন্য একটা কোড রয়েছে। কোডটি-( *247#)।কোডের মাধ্যমে বিকাশে টাকা লেনদেন-

  • আপনি যদি ১ হাজার টাকা ক্যাশআউট করেন সেক্ষেত্রে কমিশন পাবেন ৪ টাকা ১০ পয়সা।
  • একই ভাবে ১০ হাজার টাকা লেনদেনে পাবেন ৪১ টাকা।

আশা করি কোডের মাধ্যমে কেমন বিকাশ কমিশন পাবেন বুঝতে পারছেন।এখন চলুন এজেন্ট অ্যাপ ব্যবহারে কেমন কমিশন পাবো জেনে নিই।

বিকাশ এজেন্ট অ্যাপের মাধ্যমে টাকা লেনদেন করলে

বিকাশ কোডের মাধ্যম থেকে বিকাশ এজেন্ট অ্যাপ ব্যবহারে আপনার সুবিধা বেশি।কারণ: এজেন্ট অ্যাপ ব্যবহারে আপনি কমিশন বলে পাবেন।নিম্নে বিকাশ এজেন্ট অ্যাপ ব্যবহারে কমিশন তুলে ধরা হলোঃ-

  • আপনি যদি বিকাশ এজেন্ট অ্যাপ ব্যবহার করে লেনদেন করেন তাহলে কমিশন পাবেন হাজারে ৩ টাকা ৩০ পয়াসা এবং অতিরিক্ত আরও ২০ পয়সা। সর্বমোট হাজারে ৪ টাকা ৫০ পয়সা কমিশন পাবেন।
  • একইভাবে ১০ হাজার টাকায় এজেন্ট অ্যাপ ব্যবহার করে টাকা লেনদেন করলে পাবেন ৪৩ টাকা।

আশা  করি  বুঝতে  পারছেন, বিকাশ  কোড  ব্যবহার  করার চেয়ে  বিকাশ  এজেন্ট  অ্যাপ  ব্যবহারে  বেশি  কমিশন  পাওয়া  যায়।

বিকাশ (bKash) এজেন্ট ব্যবসা করার ১৫ টি উপায়

বিকাশ (bKash) এজেন্ট ব্যবসায় ব্যবহারের অনেক উপায় আছে।নিম্নে থেকে বিকাশ (bKash) এজেন্ট ব্যবসা করার ১৫ টি উপায় জেনে নিই

বিকাশ (bKash) এজেন্ট ব্যবসা করার ১৫ টি উপায়
  • অনলাইন  পেমেন্ট  গ্রহণ:  ই-কমার্স বা ফেসবুক শপে কাস্টমারের কাছ থেকে সরাসরি bKash পেমেন্ট নিন।
  • মোবাইল  রিচার্জ  ব্যবসা:  বিকাশ অ্যাপ থেকে মোবাইল রিচার্জ দিয়ে কমিশন উপার্জন।
  • বিল  পেমেন্ট  সার্ভিস:  বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানির বিল কাস্টমারের হয়ে দিয়ে সার্ভিস চার্জ নিন।
  • টিকিট  বুকিং  পেমেন্ট:  বাস, ট্রেন বা সিনেমা টিকিট বুকিংয়ের পেমেন্ট কালেক্ট করা।
  • ফ্রিল্যান্সার  পেমেন্ট  গেটওয়ে:  বিদেশি ক্লায়েন্টদের টাকা গ্রহণ ও লোকাল মুদ্রায় ডেলিভারি।
  • অনলাইন  কোর্স/ট্রেনিং  বিক্রি:  কোর্স ফি bKash দিয়ে সংগ্রহ করা।
  • ডিজিটাল  প্রোডাক্ট  বিক্রি:  ই-বুক, সফটওয়্যার, গেম কার্ড ইত্যাদি বিক্রি।
  • ফিজিক্যাল  দোকানে  bKash  মার্চেন্ট  পেমেন্ট:  QR কোড বা মার্চেন্ট নম্বর ব্যবহার করে নগদহীন পেমেন্ট নেওয়া।
  • ছোট  ব্যবসার  কালেকশন  পয়েন্ট:  অন্য ছোট ব্যবসার বিক্রির টাকা সংগ্রহ করে কমিশন নেওয়া।
  • রিসেলার  ব্যবসা:  হোলসেল থেকে পণ্য কিনে bKash এর মাধ্যমে অনলাইন সেল করা।
  • মাসিক  সাবস্ক্রিপশন  সার্ভিস:  যেমন জিম, ম্যাগাজিন, অনলাইন মেম্বারশিপের ফি bKash দিয়ে নেওয়া।
  • অনলাইন  ফান্ড  রেইজিং:  দাতব্য বা সামাজিক উদ্যোগের জন্য অনুদান সংগ্রহ।
  • রিমোট  কাজের  বেতন  প্রদান:  হোম-ভিত্তিক কর্মচারীদের বেতন bKash দিয়ে দেওয়া।
  • ইভেন্ট  টিকিট  বিক্রি: কনসার্ট বা সেমিনারের টিকিটের টাকা bKash দিয়ে নেওয়া।
  • স্থানীয়  পেমেন্ট  এজেন্ট:  যারা ব্যাংকিং সুবিধা পান না, তাদের bKash ক্যাশ-ইন/আউট সার্ভিস দিয়ে ফি নেওয়া।

বিকাশ (bKash) এজেন্ট ব্যবসা করার ক্ষেত্রে সর্তকতা

বিকাশ (bKash) এজেন্ট ব্যবসা করার  ক্ষেত্রে  সর্তকতা অবলম্বন  করা  উচিত।কারণ: আপনি যদি বিকাশ ব্যবসায় লাভবান হতে চান তাহলে কিছু সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে এবং হিসাবে ঠিক থাকাতে হবে।

বিশেষ করে বিকাশ প্রতারক চক্রের কাছ থেকে সতর্ক থাকতে হবে।বর্তমান প্রতারকের অভাব নাই।আপনার বিকাশ এজেন্ট পিন কখনোই কাউকে বলা যাবে না।সবসময় বিকাশ পিন গোপন রাখুন।কোনো নাম্বারে টাকা পাঠানোর সময় সঠিক নাম্বার দিচ্ছেন কিনা ভালোভাবে দেখুন।প্রত্যোকবার লেনদেনে খাতায় লিখে রাখুন অথবা বিকাশ ব্যালেন্স চেক করুন।সর্বশেষ আপনার বিকাশ এজেন্ট একাউন্টের ব্যালেন্স কখনো কাউকে বলবেন না।

বিকাশ এজেন্ট সিম কেনার নিয়ম

বিকাশ এজেন্ট সিম কেনার নিয়ম- বিকাশ এজেন্ট সিম কেনার জন্য আপনাকে বেশ কিছু ডকুমেন্টস লাগবে।সেগুলো নিয়ে নিকটস্থ বিকাশ এজেন্ট অফিসে যোগাযোগ করুন এবং তাদের সাথে কথা বলে ফরম পূরণ করুন তারপর  সকল  ডকোমেন্টস  ঠিক  থাকলে  আপনার  সিম পেয়ে  যাবেন। তারপর বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খোলার জন্য ঐ সিম দিয়ে রেজিষ্ট্রেশন করুন।এজেন্ট সিম কিনতে ১৫০৳ মতো খরচ হতে পারে।

বিকাশ এজেন্ট ব্যবসা করার নিয়ম-শেষ মন্তব্য

আজকের আর্টিকেলে বিকাশ এজেন্ট ব্যবসা করার নিয়ম- সম্পূর্ণ গাইড আকারে তুলে ধরেছি। বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খোলা,  এজেন্ট ব্যবসা করার নিয়ম এবং এজেন্ট ব্যবসায় সর্তকতা ইত্যাদি বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেছি।আশা করি আর্টিকেলটি আপনার ভালো লেগেছে এবং আপনার বিকাশ এজেন্ট ব্যবসা শুরু করতে কোনো ধরনের বিড়ম্বনার শিকার হতে হবে না।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

রিফাত আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url