মাইগ্রেন - লক্ষণ, কারণ, ওষুধ ও চিকিৎসা সম্পূর্ণ গাইড
এলার্জি হলে করণীয়মাইগ্রেন একটি স্নায়ুবিক অবস্থা বা ব্যাধি।আজকের আর্টিকেলে আলোচনা করবো মাইগ্রেন - লক্ষণ, কারণ, ওষুধ ও চিকিৎসা। অর্থাৎ, মাইগ্রেন রোগের সম্পূর্ণ গাইড। সাধারণত মাইগ্রেন শনাক্ত করা হয় মাথাব্যাথা দ্বারা।
এ রোগ যে কোনো বয়সের ব্যাক্তির হতে পারে।আমরা সাধারণত বাচ্চাদের মাথাব্যাথা হলে সেটা মাইগ্রেন হিসেবে ধরি না,মাথাব্যথা হিসেবে ধরি।মাইগ্রেন - লক্ষণ, কারণ, ওষুধ ও চিকিৎসা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে সম্পূর্ণ আর্টিকেল পড়ুন।সূচিপত্রঃ মাইগ্রেন - লক্ষণ, কারণ, ওষুধ ও চিকিৎসা সম্পূর্ণ গাইড
- মাইগ্রেন কি?
- মাইগ্রেন কেন হয়?
- মাইগ্রেনের লক্ষণ
- মাইগ্রেনের ব্যথা কমানোর উপায়
- ঘরোয়া উপায়ে মাইগ্রেন কমানোর উপায়
- লাইফস্টাইল পরিবর্তনের মাধ্যমে মাইগ্রেন নিয়ন্ত্রণ
- মাইগ্রেন এর ওষুধ
- সাধারণত ব্যবহৃত ওষুধ
- ওষুধ সেবনের সতর্কতা
- চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী মাইগ্রেন চিকিৎসা
- মাইগ্রেন রোগে- কখন ডাক্তার দেখাতে হবে
- মাইগ্রেন নিয়ে - শেষ মন্তব্য
মাইগ্রেন - লক্ষণ, কারণ, ওষুধ ও চিকিৎসা সম্পূর্ণ গাইড
আমাদের অনেক সময় মাথাব্যাথা করে।মাথার বাম পাশে অথবা পেছনে ব্যাথা করে।আমরা এগুলোকে স্বাভাবিক ভাবেই নিয়ে থাকি কারণ- মানুষ অতিরিক্ত চিন্তা করলে,মানসিক ভাবে চাপে থাকলে মাথাব্যাথা করে কিন্তু আপনার এই মাথাব্যাথা যদি প্রতিদিন করতে থাকে তাহলে এটা স্বাভাবিক ভাবে নেওয়াটা আমাদের উচিত নয় কারণ- মাথাব্যাথার একটি বড় কারণ মাইগ্রেন।
মাইগ্রেন সাধারণত জীবনঘাতী রোগ নয়, তবে মাইগ্রেন দীর্ঘদিনের বা জটিল হলে কিছু ক্ষেত্রে বড় ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করতে পারে। চিকিৎসকরা একে "নিউরোলজিক্যাল ডিজঅর্ডার" হিসেবে দেখেন।দীর্ঘ মেয়াদী মাইগ্রেনের ফলে (স্ট্রোক, হৃদরোগ) মতো বড় ধরনের স্বাস্থ্যঝুকি হতে পারে।তাই এই রোগ বেশি মাত্রায় হলে ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করা উচিত।এ রোগ থেকে বাচতে নিম্ন থেকে মাইগ্রেন কি,কেন হয়,লক্ষণ, চিকিৎসা জেনে নিন।
মাইগ্রেন কি?
মাইগ্রেন হলো এক ধরণের মাথাব্যাথা। এটি প্রথমে মাথার এক পাশে শুরু হয় ধীরে ধীরে মাথার অন্য পাশে ছড়িয়ে যায়।মাইগ্রেন হলে শুধুমাত্র মাথাব্যথা হয় না।মাথাব্যথা ছাড়াও আরও বেশ কিছু উপসর্গ রয়েছে।বমি বমি ভাব হয়, হঠাৎ দৃষ্টি শক্তি কমে যায়, মাথা চিন চিন করে এগুলো মাইগ্রেন রোগ হওয়ার আগে সংকেত দেয়।তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে কোনো ধরনের সংকেত দেয় না, এগুলোকে সাইলেন্ট মাইগ্রেন বলা হয়।
মাইগ্রেন কেন হয়?
মাইগ্রেন কেন হয়? এর উত্তর এখনো স্পষ্ট না।তবে, গবেষণায় দেখা গেছে মাইগ্রেন হওয়ার পেছনে কিছু সম্ভাব্য কারণ রয়েছে।নিম্নে মাইগ্রেন হওয়ার কিছু সম্ভাব্য কারণ তুলে ধরা হলোঃ-
- জেনেটিক/বংশগত প্রভাব — যদি পরিবারের কারোর মাইগ্রেন সমস্যা থাকে তাহলে পরিবারের অন্যদের মধ্যে ছড়িয়ে যেতে পারে।
- মস্তিষ্কের রাসায়নিক ভারসাম্যহীনতা— শরীরে সেরোটোনিন (Serotonin) ও অন্যান্য নিউরোট্রান্সমিটার ওঠানামা করলে মাইগ্রেনের ব্যথা শুরু হতে পারে।
- রক্তনালীর পরিবর্তন— মস্তিষ্কের রক্তনালীর মধ্যে রক্ত প্রবাহের সময় সংকুচিত আবার কখনো প্রসারিত হলে তীব্র মাথাব্যথা হয়।
- হরমোনাল পরিবর্তন— হরমোনাল পরিবর্তনের কারণে মাইগ্রেন সমস্যা হতে পারে।বিশেষ করে মেয়েদের মাসিক ঋতুচক্র, গর্ভাবস্থা বা মেনোপজের সময় মাইগ্রেনের প্রবণতা অনেকটাই বেড়ে যায়।
- পরিবেশগত কারণ— হঠাৎ করে আবহাওয়া পরিবর্তন, তাপমাত্রা বা আর্দ্রতার তারতম্য হলে অনেক সময় এটি ট্রিগার হিসেবে কাজ করে।
মাইগ্রেন হওয়ার পেছনে নির্দিষ্ট কারণ স্পষ্ট করে কোথাও বলা নাই।তবে বিশেষজ্ঞদের মতে জেনেটিক, আবহাওয়া ও পরিবেশগত কারণে এই সমস্যা হয়ে থাকে।
মাইগ্রেনের লক্ষণ
মাইগ্রেন রোগের প্রধান লক্ষণ হলো মাথা ঘোরা না চিন চিন করা,অনেকটাই মাথা ব্যাথার মতো কিন্তু মাথাব্যাথা না।এ রোগে মাথা ব্যাথা রোগের মতো উপসর্গ দেখা যায়।সাধারণ মাথাব্যাথা হলে ২০-২৫ মিনিটে সেরে যায়, কিন্তু মাইগ্রেন সমস্যার মাথাব্যাথা কয়েক ঘন্টা থেকে কয়েক দিন পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে।
মাইগ্রেন সমস্যা শুধুমাত্র মাথাব্যাথা দ্বারা শনাক্ত করা যায় না এর আরও বেশ কিছু লক্ষণ রয়েছে যেমন— মাথার একপাশ ব্যাথা করতে করতে অন্য পাশে ব্যাথা ছড়িয়ে পড়া, আলো, শব্দ বা গন্ধে অতিরিক্ত সংবেদনশীলতা, বমি বমি ভাব হওয়া ও বমি করা, মাথা ঘোরা বা ঝিমুনি, ঘাড় শক্ত হয়ে যাওয়া বা ব্যথা করার মতো লক্ষণ পরিলক্ষিত হয়।
এছাড়াও, কিছু মানুষের মাইগ্রেন শুরু হওয়ার আগে বা চলাকালে বিশেষ কিছু লক্ষণ দেখা দেয় যাকে ডাক্তারি ভাষায় অরা (Aura) বলে।এই সময়ে মাইগ্রেনের বেশকিছু লক্ষণ দেখা যায়।যেমন— চোখে ঝাপসা দেখা, আলো বা উজ্জ্বল দাগ দেখা, হাত-পা ঝিনঝিন করা বা অসাড় হয়ে যাওয়া, কথা বলতে অসুবিধা হওয়া, মনোযোগ ধরে রাখতে না পারা ইত্যাদি। এ ধরনের লক্ষণ কয়েক মিনিট থেকে এক ঘণ্টা পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে।
মাইগ্রেনের ব্যথা কমানোর উপায়
মাইগ্রেন একটি স্নায়বিক অবস্থা বা ব্যাধি যা অনেক সময় এ ব্যথা কষ্টদায়ক হতে পারে,তবে আপনি কিছু ঘরোয়া উপায় এবং লাইফ স্টাইলের পরিবর্তনের মাধ্যমে মাইগ্রেনের ব্যথা কমানো সম্ভব।নিম্নে মাইগ্রেনের ব্যথা কমানোর উপায় তুলে ধরা হলো—
ঘরোয়া উপায়ে মাইগ্রেনের ব্যাথা কমানোর উপায়
আপনি যদি কিছু ঘরোয়া উপায় অবলম্বন করেন তাহলে তাৎক্ষণিক মাইগ্রেনের ব্যাথা কমানো সম্ভব।নিম্নে ঘরোয়া উপায়ে মাইগ্রেনের ব্যাথা কমানোর উপায় তুলে ধরা হলো—
- শান্ত অন্ধকার ঘরে বিশ্রাম নিন – আলো ও শব্দ মাথাব্যাথা বাড়িয়ে দেয় তাই শান্ত হয়ে অন্ধকার ঘরে বিশ্রাম নিন ফলে মস্তিষ্ক শান্ত হবে, মাথার রক্ত সঞ্চালন স্বাভাবিক হবে, তাই আলো ও শব্দ এড়িয়ে চলুন।
- ঠাণ্ডা বা গরম সেঁক – কপাল বা ঘাড়ে বরফের ব্যাগ লাগান/ঠাণ্ডা কাপড় দিতে পারেন এতে করে ব্যথা উপশম হবে।তবে, কিছু ক্ষেত্রে গরম সেঁকও কাজে দেয়।
- পর্যাপ্ত পানি পান করুন – পানি শরীর হাইড্রেট রাখে। শরীরে পানিশূন্যতা (ডিহাইড্রেশন) যা মাইগ্রেন বাড়ায়।তাই দিনে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করুন।
- মানসিক চাপ কমান– মানসিক চাপ শরীরে স্বাভাবিক রক্ত সঞ্চালনে বাধা।তাই রক্ত সঞ্চালন বাড়াতে মাথা ও ঘাড় ম্যাসাজ করতে পারেন ফলে মানসিক চাপও কমবে,রক্ত সঞ্চালনও বাড়বে।
- ক্যাফেইন (পরিমিত মাত্রায়) – এক কাপ কফি বা চা মাইগ্রেন কমাতে সাহায্য করতে পারে। তবে অতিরিক্ত ক্যাফেইন স্বাস্থ্যোর জন্য ক্ষতিকর তাই পরিমিত মাত্রায় খান।চা বা কফি তে কাফেইনের পরিমাণ বেশি।
লাইফস্টাইল পরিবর্তনের মাধ্যমে মাইগ্রেন নিয়ন্ত্রণ
লাইফস্টাইল পরিবর্তনের মাধ্যমে মাইগ্রেন সমস্যা দীর্ঘ মেয়াদি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।বিশেষ করে খাদ্যাঅভ্যাস পরিবর্তন,আমরা সাধারণত অস্বাস্থ্যকর খাবারগুলো বেশি খায় আর এই অস্বাস্থ্যকর খাবারগুলোই মাইগ্রেন সমস্যার জন্য দায়ী তাই আমাদের প্রতিদিনের খাবার তালিকাতে সুষম খাবার রাখতে হবে।অতিরিক্ত তেল, চর্বি, ঝাল মসলা জাতীয় খাবারগুলো এড়িয়ে চলতে হবে এবং শাকসবজির মতো পুষ্টি কর খাবার গুলো খেতে হবে।
এছাড়াও, আমাদের প্রতিদিন পুষ্টি কর খাবার খাওয়ার পাশাপাশি নিয়মিত পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুম দিতে হবে (৭-৮) ঘন্টা।মানসিক চাপ (strees) কমাতে হবে স্ট্রেস কমানোর জন্য প্রতিদিন আধা ঘন্টা থেকে এক ঘন্টা ব্যায়াম করতে পারেন যেমন- মেডিটেশন, যোগব্যায়াম, গভীর শ্বাস নেওয়া, হাঁটা, সইকেলিং, জগিং ইত্যাদি।মাইগ্রেন সমস্যায় বেশি দেখা দেয় মাথাব্যাথা করা আর এই মাথা ব্যাথা কমাতে ট্রিগার এড়িয়ে চলা উচিত। কারও ক্ষেত্রে অতিরিক্ত আলো, শব্দ বা কিছু খাবার মাইগ্রেনের কারণ হতে পারে। তাই এগুলো নোট করে এড়িয়ে চলা দরকার।এগুলো প্রতিনিয়ত চর্চা করার মাধ্যমে দীর্ঘ মেয়াদী মাইগ্রেন সমস্যা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।তবে আপনার যদি প্রতিদিন এই সমস্যা দেখা দেয় তাহলে অভিজ্ঞ নিউরোলজিস্টের পরামর্শ নিন।
মাইগ্রেন এর ওষুধ
মাইগ্রেন সমস্যায় বেশ কয়েক ধরনের ওষুধ ব্যবহার করা হয়।মাইগ্রেন সমস্যায় বেশি মাথাব্যাথা করে তাই এ মাথাব্যথা কমাতে প্যারাসিটামল, আইবুপ্রোফেন, ন্যাপ্রক্সেনের মতো ওষুধ গুলো ব্যবহার করা হয়।আর যদি বমি বমি ভাব হয় তাহলে Domperidone, Metoclopramide ইত্যাদি ওষুধ ব্যবহার করা হয়।
তবে, ওষুধ ব্যবহারের পূর্বে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করুন তারপর ওষুধ সেবন করুন।ডাক্তার আপনার বয়স, অন্য রোগ ইত্যাদি দেখে ওষুধ দিবে।নিজে নিজে ওষুধের ডোস গ্রহণ করতে হিতে বিপরীত হতে পারে।তাই আগে নিউরোলোজিস্ট ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করুন তারপর ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবন করুন। এছাড়াও, অতিরিক্ত ক্যাফেইন জাতীয় খাবারগুলো এড়িয়ে চলুন।অতিরিক্ত ক্যাফেইন শরীরের জন্য ক্ষতিকর মাইগ্রেন সমস্যা আরও বাড়িয়ে দিতে পারে।
মাইগ্রেন রোগে সাধারণত ব্যবহৃত ওষুধ
মাইগ্রেন সমস্যায় ডাক্তাররা সাধারণ কিছু ওষুধ দিয়ে থাকে তার হলো- প্যারাসিটাম্যাল, ডাইক্লোফেনাক, ন্যাপ্রক্সেন ইত্যাদি ওষুধ সেবন করতে পারেন।আর,আপনার মাইগ্রেন সমস্যা যদি কয়েকদিন পর পর অর্থাৎ, মাঝে মাঝে হয় সেক্ষেত্রে মাইগ্রেন রোগ প্রতিরোধের জন্য প্রতিরোধমূলক ওষুধ গুলো সাধারণত ব্যবহার করা৷ হয়।
তবে মনে রাখবেন,সবার জন্য সব ওষুধ কাজ নাও করতে পারে। নিজে থেকে কোনো ওষুধ সাজেস্ট করে খাওয়া উচিত না এতে আপনার ক্ষতি হবে পারে ওষুধের ভুল ব্যবহারে মৃত্যু মতো ঝুঁকিতে পড়তে পারেন তাই আগে নিউরোলজিস্ট ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করুন তারপর ওষুধ সেবন করুন।ডাক্তার আপনার বয়স এবং অন্যান্য রোগ নির্ণয় করার পর ওষুধ দিবে।
ওষুধ সেবনের সতর্কতা
মাইগ্রেন সমস্যায় ওষুধ সেবনের ক্ষেত্রে সর্তকতা অবলম্বন করতে হবে।উল্টা পাল্টা ওষুধ খেলে উপকারের চেয়ে আর বেশি আপনার শরীরের ক্ষতি হবে।নিম্নে মাইগ্রেন রোগে কিছু ওষুধ সেবনের জন্য সর্তক বার্তা তুলে ধরা হলো-
আপনি যদি মাথা ব্যাথার জন্য (Paracetamol, Ibuprofen, Naproxen) এই ওষুধ গুলো খান তাহলে এগুলো কখনোই খালি পেটে খাবেন না।খালি পেটে খেলে পেটে গ্যাসট্রিক অম্বলের মতো সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে।আর যদি প্রতিরোধ মূলক ওষুধ খান সেক্ষে দীর্ঘ মেয়াদি খেয়ে যেতে হবে।কিছুদিন খেয়ে বাদ দেওয়া যাবে না।আর, সব সময় মানসিক চাপ(strees), অ্যালকোহল, ক্যাফেইন জাতীয় খাবার বেশি খাওয়া, অনিদ্রা ইত্যাদি নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।সব শেষে ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী ওষুধ খেতে হবে।নিজের মতো করে খেলে বিপদ হতে পারে।
চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী মাইগ্রেনের চিকিৎসা
মাইগ্রেন সমস্যায় চিকিৎসাকের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা- সাধারণত এ সমস্যা দুইভাবে নিয়ন্ত্রণ করার পরামর্শ দেন চিকিৎসক।প্রথমত - দ্রুত মাথাব্যথা কমানোর জন্য অ্যাকিউট ট্রিটমেন্ট এবং দ্বিতীয়ত প্রিভেন্টিভ ট্রিটমেন্ট - ঘন ঘন মাইগ্রেন যাতে না হয় সেজন্য নিয়মিত ওষুধ।অ্যাকিউট ট্রিটমেন্টে সাধারণ মাথাব্যথা নাশক ওষুধ ব্যবহার করা হয়।অন্যদিকে প্রিভেন্ট ট্রিটমেন্ট করা হয় যাদের প্রতি সপ্তাহে (১-২) বার মাইগ্রেন সমস্যা হয়।
প্রতি সপ্তাহে মাইগ্রেন সমস্যার কারণে ডাক্তার প্রতিরোধ মূলক ওষুধ সাজেস্ট করেন।ডাক্তার যে শুধুমাত্র ওষুধ সেবনের পরামর্শ দেন এমনটা না,লাইফ স্টাইল পরিবর্তনের জন্য বেশ কিছু পরামর্শ দিয়ে থাকে।যেমন- নিয়মিত পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুম নিশ্চিত করা, পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করা, মানসিক চাপ কমানো এবং নিয়মিত শারীরিক পরিশ্রম করা।
সর্তকতা- মাইগ্রেন রোগের ওষুধ খাওয়ার আগে ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করে ওষুধ খেতে হবে।আপনি যদি অন্য কোনো রোগ থাকে যেমন- লিভার, হার্ট, কিডনি ইত্যাদি তাহলে বিশেষ ভাবে সর্তক থাকতে হবে।নিজে থেকে কখনো ওষুধ সাজেস্ট করে খাবেন না।এতে আপনার জীবন বড় ধরনের ঝুঁকির মধ্যে পড়তে পারে।
মাইগ্রেন রোগে- কখন ডাক্তার দেখাতে হবে
কখন ডাক্তার দেখাবেন? সব মাইগ্রেনেই ডাক্তার দেখানো জরুরি না। তবে কিছু পরিস্থিতিতে অবশ্যই নিউরোলজিস্ট ডাক্তার দেখাতে হবে।নিম্নে কখন ডাক্তার দেখানো উচিত তুলে ধরা হলোঃ-
- মাইগ্রেনের তীব্রতা- আপনার যদি প্রতি মাসে ৪-৫ বার তীব্র মাথা ব্যাথা করে তাহলে ডাক্তার দেখাতে হবে।কারণ- তীব্র মাথাব্যাথার ফলে কাজ করা অনেক কষ্টদায়ক।
- স্নায়বিক লক্ষণ দেখা দিলে- অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করুন।যেমন- চোখে ঝাপসা দেখা, ডাবল ভিশন,হাত-পা অবাশ হয়ে যাওয়া বা দুর্বল লাগা,কথা আটকে যাওয়া বা অস্পষ্ট হয়ে যাওয়া, মানসিক ভারসাম্য হারানো ইত্যাদি লক্ষণ।
- বিশেষ করে গর্ভাবস্থা, বয়স বেশি হয়ে গেলে মাইগ্রেন সমস্যা হলে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবন করতে হবে।
- আপনার মাইগ্রেন সমস্যা থাকার পাশাপাশি যদি অন্য রোগ (ডায়াবেটিস, হার্ট,পেশার ইত্যাদি) তাহলে দেরি না করে ডাক্তার দেখাতে হবে এবং ওষুধ খেতে হবে।নিজে থেকে ওষুধ সাজেস্ট করা যাবে না।
মাইগ্রেন নিয়ে - শেষ মন্তব্য
আজকের আর্টিকেলে মাইগ্রেন রোগের - লক্ষণ, কারণ, ওষুধ ও চিকিৎসা সম্পূর্ণ গাইড তুলে ধরেছি।এছাড়াও মাইগ্রেন সমস্যায় মাথাব্যাথা কমানোর উপায়, মাইগ্রেন রোগে চিকিৎসকের পরামর্শ আলোচনা করেছি। আশা করি আর্টিকেলটি আপনার ভালো লেগেছে।মাইগ্রেন রোগ নয়, যে কোনো রোগে নিজে থেকে ওষুধ সাজেস্ট করে না খেয়ে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ খেতে হবে।
রিফাত আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url